১০ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

২৯ ডিসেম্বর মাঠে নামছে সেনাবাহিনী

নিউজ ডেক্সঃ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সশস্ত্র বাহিনীসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামছে ২৯ ডিসেম্বর। তারা স্ট্রাইকিং ও মোবাইল ফোর্স হিসেবে ভোটের আগে ও পরে মোট ১৩ দিন দায়িত্ব পালন করবে।বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সই করা এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় মেট্রোপলিটন এলাকা, মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে এবং পার্বত্য ও দুর্গম এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৬ জন ও গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) ভোটকেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ফোর্স মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজনে রিটার্নিং কর্মকর্তা এ সংখ্যা বাড়াতে পারবেন।নির্বাচন কমিশন থেকে আগেই জানানো হয়েছে, এবারের নির্বাচনে ৫ লাখ ১৬ আনসার সদস্য, ১ লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ ও র্যা ব সদস্য, ২ হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড সদস্য এবং ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কতজন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। তবে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার সম্প্রতি জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫ হাজার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। এবার প্রয়োজনে এর চেয়ে বেশি মোতায়েন করা হতে পারে।
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ২৭টি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৯৬ জন। তবে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা এলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে বা কমতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। আর ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৫২ জন।৪ লাখ ৬ হাজার ৩৬৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২ লাখ ৮৭ হাজার ৭২২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৩ জন পোলিং অফিসার, মোট ৯ লাখ ৯ হাজার ৫২৯ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।স্বরাষ্ট্র সচিবের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ‘‌ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের’ বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম সম্পন্ন হবে; রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা বা থানায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনী অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা প্রদান করবে; সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন এবং রিটার্নিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোটগণনা কক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে এবং আইন, বিধি ও পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, উপকূলবর্তী এলাকায় নৌবাহিনী প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে; ঝুঁকি বিবেচনায় রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলোচনাক্রমে প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা কম বা বেশি করা যাবে; পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বা মহাসড়কগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে; বিমানবাহিনী প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীগুলোর অনুরোধে ওড়াতে সহায়তা করবে; সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক মোতায়েন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে এবং বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে চাহিদামত আইনানুগ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে।যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৫ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় ট্যাক্সি, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল করতে পারবে না। ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করতে পারবেন না কেউ।কেবল জরুরি প্রয়োজনীয় বাহন ও ইসির অনুমতিপ্রাপ্ত যান চলাচল করতে পারবে। ভোটগ্রহণের আগের ৪৮ ঘণ্টা ও পরের ৪৮ ঘণ্টা মিছিল-মিটিং ও শোভাযাত্রা করা যাবে না।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন