
বিপ্লব কান্তি নাথঃ
সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ২৬ জুন বৃহস্পতিবার শুরুআগামীকাল ২৬ জুন বৃহস্পতিবার থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মোবাইলসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারের সভাপতিত্বে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে আয়োজনে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রশ্নপত্র ফাঁস বা ফাঁস সংক্রান্ত গুজব এবং পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীদের কাছে নকল সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, এবারের পরীক্ষায় চট্টগ্রামে ৩০৭টি কলেজ থেকে মোট ১ লাখ ২ হাজার ৮৬৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।
সূত্রমতে, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় মোট ৭১ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩১ হাজার ৮৩৯ এবং ছাত্রী ৩৯ হাজার ৬৮৪ জন। শুধু মহানগরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৫৮৪। কক্সবাজার জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৫ জন, যার মধ্যে ছাত্র ৪ হাজার ৭২২ ও ছাত্রী ৭ হাজার ২৮৪ জন। রাঙামাটিতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ হাজার ৫৫৪ জন, যার মধ্যে ছাত্র ২ হাজার ৪১৬ এবং ছাত্রী ৩ হাজার ১৩৮ জন। খাগড়াছড়িতে ৭ হাজার ৮২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন, ছাত্র ৩ হাজার ৩০৬ ও ছাত্রী ৩ হাজার ৭৭৬ জন। বান্দরবানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ৮৭১ জন, যার মধ্যে ছাত্র ১ হাজার ৮৫৬ এবং ছাত্রী ২ হাজার ১৫ জন। মোট ১১৫টি কেন্দ্রে এসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন।
শিক্ষাবোর্ড এ বছর পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনার কথা জাননিয়েছে।এর মধ্যে রয়েছে-পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকা, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে তথ্য লেখা ও বৃত্ত ভরাট, উত্তরপত্র ভাঁজ না করা, শুধু সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা এবং বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি না থাকা, পরীক্ষার কেন্দ্রে কোনো অবস্থাতেই মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না, তত্ত্বীয়, এমসিকিউ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় পৃথকভাবে পাস করতে হবে। এ ছাড়া পরীক্ষার্থী শুধু প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে এবং স্থানান্তরের মাধ্যমে আসনবিন্যাস করা হয়েছে, অর্থাৎ নিজ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নেওয়া হবে না। প্রতিটি অংশের উপস্থিতি পত্রে পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর দেওয়া বাধ্যতামূলক।
পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রের বাইরে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োজনে মাইক ব্যবহার করে সচেতনতা তৈরি, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং প্রতিটি কেন্দ্রে নকল প্রতিরোধ পোস্টার টাঙ্গানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় কেন্দ্রে শুধু এনালগ কাঁটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহারের অনুমতি থাকবে। এ ছাড়া বর্ষাকালে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিসকে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধিনে এবার ১১৫টি কেন্দ্রে ৩০৭টি কলেজের ১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিবে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য মোট ৪০টি পরিদর্শক টিম গঠন করা হয়েছে। তারমধ্যে সাধারণ পরিদর্শক দল গঠন করা হয়েছে ৩০টি ও বিশেষ পরিদর্শক দল ১০টি।