
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের মনিডাকুয়া গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী পানাউল্লাহ ও তার ভাই সোনা উল্লাহর নামে আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১০ একর ৪৩ শতাংশ জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে।এ ঘটনার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসীর আয়োজনে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুর ১২:০০টায় নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের দোসর আব্দুল আজিজ সরকার গং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ও বানোয়াট কাগজপত্র তৈরি করে ওই জমি ভোগ দখলের করে খাচ্ছেন।আদালতের রায় গোপন করে নব্বইয়ের দশকে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে জমির রেকর্ড নিজেদের নামে করে নেয়।বাক প্রতিবন্ধী পানাউল্লাহর পরিবারের সদস্যরা এ কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানি, ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।

সংবাদ সম্মেলনে পানাউল্লাহর ভাতিজা সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমরা নাবালক থাকায় চাচা শরীয়ত উল্লাহ ১৯৪০ সালের ২৬ নভেম্বর ৪৬৬১ নং দলিলে ১২ সনা মেয়াদের পাট্টা দলিল মূলে ৫৯১ শতক জমি আব্দুল আজিজ সরকার গং নিকট বন্ধক রাখেন। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণের পর জমি ফেরত দেওয়ার বদলে তারা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে মোট ১০৪৩ শতক জমির রেকর্ড নিজেদের নামে করে নেয়। পরবর্তীতে আমরা আদালতে মামলা করি এবং আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু প্রভাবশালী চক্রটি আদালতের রায় গোপন করে অবৈধভাবে জমি দখলে রেখেছে।”পানাউল্লাহর দুই মেয়ে পারভীন ও পারুল অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের বাবার জমি অন্যরা দখল করে রেখেছে। আমরা পরিবার নিয়ে এখন রাস্তায় বসবাস করছি।
আমরা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি।

প্রতিবেশী আমিনুল ইসলাম, হায়দার আলী, আবুল কাশেম আলী ও সোলাইমান আলীসহ গ্রামবাসীরা একাত্ম প্রকাশ করে বলেন,একজন অসহায় বাক প্রতিবন্ধীর জমি দখলের অপচেষ্টা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
তারা প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে ভূমিদস্যুদের হাত থেকে জমি উদ্ধারের করে ভুক্তভোগী পরিবারকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।এ সময় গ্রামবাসীরা ঘোষণা দেন, জমি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এদিকে জমি দখল,রেকর্ড সংক্রান্ত বিষয় ও প্রতিবন্ধী পরিবারের লোকজনদের উপর হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগীরা আব্দুল আজিজ গংদের বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঘটনাটির সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাজমুল আলম বলেন,“ঘটনার বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবো।”
