
আবদুল কাদের চট্টগ্রামঃ
পবিত্র কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন, “হে হাবীব, আমি আপনাকে বিশ্বজগতের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি” (আল আম্বিয়া: ১০৭)। প্রিয় নবীজির (দ.) আগমনে পৃথিবী একদিকে যেমন পবিত্র হয়েছে অন্যদিকে হয়েছে তৌহিদের প্রতিষ্ঠা। নবীজি (দ.) সকল প্রকার অন্যায় অনাচার ভেদাভেদ বৈষম্য দূর করেছেন। সাদা-কালো, উচু-নিচু, ধনী-গরিব সকল প্রকার বৈষম্যকে দূরীভূত করে প্রতিষ্ঠা করেছেন সৌহার্দ্য সম্প্রীতির অনন্য বন্ধন। আইয়্যামে জাহেলিয়তের অন্ধকার যুগে এসে প্রিয় রাসূল (দ.) এমন সংস্কার করেছেন যা অনন্তকাল ধরে স্মরণীয় বরণীয় অনুসরণীয় অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। প্রিয় রাসূল (দ.) যে আদর্শ দিয়ে সংস্কার করেছেন সেই নিয়ামত তথা নূরে বাতেন উনি রেখে গিয়েছেন উম্মতের কল্যাণে। কালের ধারাবাহিকতায় সেই নিয়ামত এসে পৌঁছেছে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.) এর সিনা মোবারকে। সেই বাতেনী নূর তাওয়াজ্জুহ তথা অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে নফসানিয়ত বা পশুত্বকে দূর করে ইনসানিয়ত তথা মনুষ্যত্বকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

শুক্রবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বাদে জুমা হতে চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত ৭২তম পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মাহফিলে মাননীয় মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী প্রধান মেহমানের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।প্রধান মেহমান আরো বলেন একজন সাধারণ মানুষ এই মহান তরিক্বতে অন্তর্ভুক্ত হলে প্রতিদিন এগারশত এগারবার মুহাব্বতের নিয়তে দরূদ শরীফ আদায় করতে হয়। কখনো ক্বাজা হয়ে গেলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আদায় করে দিতে হয়। এই দরবারের একজন অনুসারী তরিক্বতে অন্তর্ভুক্ত হলে জীবনে শুধু বারোই রবিউল আউয়াল একদিন নয় বরং ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) এর আদর্শকে প্রতিদিন ব্যাবহারিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করে। নূরে বাতেন ক্বলবে নিলে প্রিয় রাসূল (দ.) এর মুহাব্বত অন্তরে আসে। যার ফলশ্রুতিতে ফরজ এবাদতের পাশাপাশি সুন্নাতের প্রতি মুহাব্বত সৃষ্টি হয়। এভাবে সাধারণ একজন ব্যক্তি পরিণত হয় খালেছ আশেকে রাসূলে। হযরত গাউছুল আজম (রা.) সমস্ত জীবন মানুষকে নূরে বাতেন দিয়ে আত্মশুদ্ধির অলঙ্কারে সাজিয়েছেন। উনার এই কাজ প্রিয় নবীজির (দ.) কাছে এতটাই পছন্দ হয়েছে যে উনাকে রওজা পাকে ডেকে নিয়ে অলৌকিকভাবে বায়াত প্রদান করে খলিফায়ে রাসূল (দ.) এর মর্যাদা দান করেছেন, সুবহানআল্লাহ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মুফতি মাওলানা কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, প্রফেসর ড. জালাল আহমদ ও মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী ফয়সাল।মিলাদ-কিয়াম শেষে মাননীয় প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদি¦য়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।
