২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চুয়েটে ২ ছাত্রকে নির্যাতন ৭ বছর পর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৯ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

পলাশ কান্তি নাথঃ

২০১৮ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদার দাবিতে ২ শিক্ষার্থীকে বর্বর কায়দার নির্যাতনের ঘটনায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের তৎকালীন ৯ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা।মঙ্গলবার (১১ মার্চ) চট্টগ্রামের চিফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী জামিল আহসান এবং মাহমুদুল ইসলাম। মামলা দুটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চুয়েট শাখার তৎকালীন সভাপতি সৈয়দ ইমাম বাকের, সাধারন সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন (সম্রাট), সাংগাঠনিক সম্পাদক অতনু মুখার্জী, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিলয় দে, সহ-সভাপতি মোঃ মেহেদী হাসান ফরহাদ ও সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম ফাহাদসহ অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।মাহমুদুল ইসলাম তার অভিযোগপত্রে দাবি করেছেন, ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই অভিযুক্তরা তকে শিবির ট্যাগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অসক্ষমতার কথা জানিয়ে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রথমে তারা গিয়ে তার রুম ভাঙচুর এবং শিক্ষা সনদ নিয়ে যায়। সার্টিফিকেটগুলো ফেরত পেতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে ছাত্রকল্যাণ সহকারী সাদেকুল ইসলাম তাকে ওই ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ মতো তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে, তারা তাকে বেদম মরধর করে আটকে রেখে তার বাবার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। সেই সময় জীবন বাঁচাতে টাকার জন্য এক সপ্তাহের সময় চেয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও পরে টাকা দিতে না পেয়ে নির্যাতনের আশংকায় মাহমুদুল ইসলাম আর কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারেন নি। এতে তার ছাত্রজীবন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের শাসন থাকায় গত ৭ বছর চেষ্টা করেও কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেননি বলেও অভিযোগপত্রে দাবি করেছেন তিনি।জামিল আহসান তার অভিযোগে বলেছেন, একই পদ্ধতিতে তার কাছেও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ওই সন্ত্রাসীরা। কিন্তু এত টাকা জোগাড় করা তার পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসে গেলে তাকে তুলে নিয়ে ছাত্র সংসদের টয়লেটে আটকে রেখে উপুর্যুপরি মারধর করে অভিযুক্তরা। মারধরে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে পানি দিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আবারও মারধর করে তারা। তারপর মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে রাউজান থানায় দিয়ে যায় ছাত্রলীগের ওই সন্ত্রাসীরা। ওই মামলায় ৩ মাস কারাবরণও করতে হয় তাকে। এই হয়রানির কারণে তারও শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে মামলায় তিনি দাবি করেন।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন