৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আগামী ১৬ এপ্রিল কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমীর পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে

সুজন কুমার রায় কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

প্রতি বছর চৈত্রমাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানোৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতিবছরের ন্যায় আগামী ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রি. রোজ মঙ্গলবার ব্রহ্মপুত্র নদে মহাষ্টমীর স্নান অনুষ্ঠিত হবে। যা প্রতি বছরে শুধু একদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের স্নানের সুযোগ ঘটে। তবে এ সুযোগ সবার ভাগ্যে জুটে না। কেননা ব্রহ্মপুত্র নদ তো সারা বাংলাদেশে প্রবাহিত হয় না, ব্রহ্মপুত্র নদ হিমালয় পর্বতের কৈলাশ শৃঙ্গের মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে আসামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ভিতর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র প্রবাহিত। অষ্টমী তিথিতে এ সব জেলার ব্রহ্মপুত্রের বিভিন্ন ঘাটে স্নান মেলা হয়ে থাকে। কাজেই এ সমস্ত জেলার হিন্দু আাধিবাসী খুবেই ভাগ্যবান।পুরাণ মতে, ত্রেতাযুগে পরশুরাম মাতৃ হত্যা পাপের দায়ে তার হাতে কুঠার আটকে যায়। বহুতীর্থ ভ্রমন করে তার কুঠার খসলো না। অবশেষে কৈলাস শৃঙ্গের ব্রহ্মকুন্ডে স্নান করা মাত্রই তার হাতের কুঠারটি খসে পড়ল। সেদিন ছিল শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথি। পরশুরাম অনুধাবন করলেন, এ অতীব পবিত্র জলের ধারাটি যদি সমতলভুমিতে আনা যায়, তবে মানুষের কল্যাণ ও মোক্ষ লাভ হবে। শুভ ইচ্ছা যার, ঈশ্বর সহায় তার। তিনি কুঠারে লাঙ্গল বেঁধে দীর্ঘ সময় ও দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে, পাহাড় পর্বত পেরিয়ে ব্রহ্মপুত্রের জলের ধারাকে সমতলভুমিতে নিয়ে আসেন। তিনি আসামের ধুবরি হয়ে কুড়িগ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চিলমারীতে প্রথম বিশ্রাম নেন। এর পর লাঙ্গলবন্দের দিকে চলেন। কিন্তু লাঙ্গলবন্দে এসে লাঙ্গলের চাষ বন্দ হয়ে যায় । পরশুরাম বুঝতে পারলেন, তার মহৎ উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। লাঙ্গলবন্দ থেকে পরশুরাম ব্রহ্মপুত্রের মাহাত্ম্য প্রচারে বেরিয়ে পড়লেন। পৌরানিক মতে, ব্রহ্মার আদেশে অষ্টমী তিথিতে জগতের সব স্থানের পুণ্য ব্রহ্মপুত্রে এসে মিলিত হয়। এই ব্রহ্মপুত্রকে ঐশ্বরিক ও অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন নদ মনে করা হয় । ব্রহ্মপুত্রের জলধারা ব্রহ্মার তেজজাত। পরশুরামের আদেশে শুধুমাত্র চৈত্রের শুক্লাষ্টমীতে কয়েক ঘন্টার জন্য ব্রহ্মপুত্রের পুত সলিল এতই বিশুদ্ধ ও অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন থাকে, যা শরীলে স্পর্শ মাত্রই পাপ মোচন হয়। শারীরিক রোগও দুর হয়। স্নান মাত্রই দেহ ও মনে সজীবতা আনে এবং কোন ঠান্ডা অনুভব হবে না। তাই ভক্তি ও বিশ্বাসে ব্রহ্মপুত্রে ডুব দিতে হয়।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন