
সুব্রত কুমার শীল পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী জয়তারা ও শীতলা মন্দিরে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে দুইবার চুরির ঘটনা ঘটেছে, যা পুরো এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নিরাপদ থাকা এই মন্দিরে একের পর এক এমন চুরির ঘটনায় স্থানীয়রা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুরোহিত রাজু ঘোষাল যখন মন্দিরে প্রবেশ করেন, তখন তিনি চোখের সামনে দেখেন এক বিধ্বস্ত দৃশ্য। মন্দিরের মূল ফটক অক্ষত থাকলেও অভ্যন্তরের চিত্র সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। পূজার সামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, বিগ্রহ গায়েব, আর অলংকার ও নগদ অর্থ লুট হয়ে গেছে।মন্দির কমিটির সদস্যদের ভাষ্য অনুযায়ী, চুরি যাওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে কাসা-পিতলের বিভিন্ন পূজার সামগ্রী, প্রদীপ, পঞ্চ প্রদীপ, গাছ প্রদীপ, পিতলের বিগ্রহ, গোপাল, রাধা-গোবিন্দ, কালী মাতার বিগ্রহ, তিনটি সিংহাসন, বড় ঘণ্টা, হাত ঘণ্টা, থালা, গামলা, কলশ, গ্লাস, বাটি এবং ক্যাশ বক্সের ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২ লক্ষ টাকা।এর আগে, শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতেও একই মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। সেদিন রাত ১২টার পর পূজা-অর্চনা শেষে পুরোহিত তালাবদ্ধ করে বাসায় যান। কিন্তু পরদিন সকালে ফিরে এসে দেখতে পান, স্টোর রুমের তালা ভাঙা এবং মূল্যবান সামগ্রী চুরি হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও জয় তাঁরা মন্দির ও শীতল খোলা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সঞ্জয় কুমার খাসকেল বলেন, “এ ধরনের চুরি আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর আঘাত। ২৫ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। আমরা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।”পটুয়াখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “চুরির ঘটনায় অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এসআই খাইরুল তদন্ত শুরু করেছেন এবং শীঘ্রই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
স্থানীয়দের মতে, সম্প্রতি এলাকায় ছোটখাট চুরির ঘটনা বাড়লেও ধর্মীয় স্থানে এমন দুঃসাহসিক চুরি নজিরবিহীন। তারা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেছেন, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে এবং জনগণকে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ করেছেন।
