৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জঙ্গল সলিমপুর পাহাড় কেটে পল্ট বিক্রির মহোৎসব চলছে

মাসুদ পারভেজঃ

পাহাড় কেটে প্লট হিসেবে বিক্রি পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে ঘর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ শুরু করেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পাহাড় কাটায় বাধা দিতে গিয়ে পড়েছেন প্রভাবশালীদের রোষানলে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রফিকুল ইসলাম জানান, পাহাড় কাটছে এটি সত্য। তবে জঙ্গল ছলিমপুরের ওই এলাকা সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের অভয়ারণ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করবে। পাহাড়ি খাস জায়গা যারা বেচাকেনা করছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেরুয়ারি) বিকেলে পাহাড় কাটা বন্ধ করতে গিয়ে পাহাড়খেকোদের রোষানলে পড়েন স্থানীয় ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আজিজ।এর আগে গত বছর উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথ অভিযানে একইস্থানে পাহাড় কেটে নির্মিত অবৈধ ঘর ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে। এ ঘটনার পর কিছুদিন পাহাড় কাটা ও ঘর নির্মাণ বন্ধ থাকলেও আবার সক্রিয় হয় দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও গত বছর ২২ জনের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগে মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।উপজেলার জঙ্গল ছলিমপুরে গিয়ে দেখা যায়, ছিন্নমূল ১ নম্বর সমাজ অন্ধ কল্যাণ সমিতির জায়গার পাশে হাসেম নেতার বাড়ির পেছনে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করছেন আব্দুল হক। এরইমধ্যে পাহাড়ের অংশ কেটে আরসিসি দেওয়াল দেওয়া হয়েছে।আব্দুল হক মুঠোফোনে বলেন, পাহাড় খাস শ্রেণিভুক্ত জায়গায়। ওই পাহাড়গুলো স্থানীয় সরকার দলীয় লোকেরা দখল করে বেচাবিক্রি করে থাকেন। অধিকাংশ বহিরাগত মানুষ পাহাড়ের দখল কিনে ঘর বাড়ি করছে। আমিও দখল কিনে ঘর করেছি। এখন ঘরগুলো সংষ্কার ও বাড়ানোর জন্য পাহাড়ের কিছু অংশ কাটা হয়েছে। এতে সমস্যা হওয়ার কিছু নেই।ওই পাহাড়ি এলাকায় ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার ঠিকাদারি নিয়েছেন ফারুক ও হাসান মিস্ত্রি নামে দুই ব্যক্তি।পাহাড় কেটে প্লট হিসেবে বিক্রি হাসান মিস্ত্রি মুঠোফোনে বলেন, পাহাড় কাটার পর আমরা চুক্তিভিত্তিক ঘর তৈরি করে দিই। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পাহাড় কাটছে। এতে আমাদের করার কিছু নেই। প্রশাসন সব জানে বলেও জানান তিনি।স্থানীয় ইউপি সদস্য আরিফুল আলম বলেন, পাহাড়খেকো গফুর ও সাদেককে ম্যানেজ করতে পারলে পাহাড়ি এলাকায় সরকারি খাস প্লট মেলে অনায়াসে। প্রতিটি প্লট বেচাকেনা হয় ৮-১০ লাখ টাকা দরে।ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আজিজ বলেন, গত শুক্রবার স্কুলের মিটিং শেষে স্থানীয় পাহাড়খেকো গফুর ও সাদেকের নেতৃত্বে একটি মিটিং হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় তারা পূর্বের মতো পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করবে। বিষয়টি ইউএনও ও এসি ল্যান্ড মহোদয় জানতে আমাদেরকে ঘটনাস্থলে পাঠান। এতে পাহাড় কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে।ওই এলাকার ২ ও ৩ নং সমাজ এলাকায় অনুমতিবিহীন খাদিজাতুল কোবরা মাদরাসার হুজুর আব্দুল হক সরকারি জায়গা দখল করে ফাউন্ডেশন দিয়ে ঘর ও ভবন নির্মাণ করছেন। এভাবে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলে পরিবেশের চরম বিপর্যয় হবে বলে মন্তব্য করেন ইউপি চেয়ারম্যান।সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, জঙ্গল ছলিমপুর এলাকাটি সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের অভয়ারণ্য। কিছু প্রভাবশালী পাহাড়খেকো পাহাড় কাটছে। কয়েকদিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর ও আইনশৃংখলা বাহিনী যৌথভাবে পাহাড় কাটা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করবে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন