২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আন্তর্জাতিক ফোরামে সদস্য হওয়ার সুযোগ বেড়েছে বাংলাদেশের

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটা দেশ বাংলাদেশ। বিশ্বঅঙ্গনে বাংলাদেশের যে পরিচিতি বেড়েছে তাতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে দায়িত্ব নেয়া বা সদস্য হওয়া স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বিভিন্ন ফোরামে তাদের সদস্য হওয়ার সুযোগ বেড়েছে এবং এর পেছনে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’বাংলাদেশসহ ১১টি দেশ বৃহস্পতিবার ২০২৩-২০২৪ মেয়াদে দুই বছরের জন্য আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বোর্ড অফ গভর্নরসের সদস্য নির্বাচিত হয়।এ বোর্ডের মোট সদস্য দেশের সংখ্যা ৩৫।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের যে পরিচিতি বেড়েছে, তাতে করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে দায়িত্ব নেয়া স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক বিশ্লেষক।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক ফোরামের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা এখন বাংলাদেশের আছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বিভিন্ন ফোরামে সদস্য হওয়ার সুযোগ বেড়েছে। এর পেছনে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আইএইএ , সংস্থাটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ভিয়েনায় আইএইএর ৬৭তম সাধারণ সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের চতুর্থ দিনে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সদস্য নির্বাচিত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে আলজেরিয়া, আর্মেনিয়া, বাংলাদেশ, বুরকিনা ফাসো, ইকুয়েডর, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, প্যারাগুয়ে, স্পেন ও ইউক্রেন।আইএইএর কার্যসূচির উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারকে উৎসাহিত করা ও পারমাণবিক প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ। এ ছাড়া পারমাণবিক নিরাপত্তা ও পারমাণবিক নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন মানদণ্ড প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করাও আইএইএর উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ এর আগে নানা ধরনের ফোরামে যুক্ত হয়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মর্যাদাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক ‘বিশ্ব দক্ষতা’ ফোরামের সদস্য হয়। যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নে এ ফোরাম কাজ করে।নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে বিশ্ব দক্ষতা সম্মেলন ২০১৮-তে বাংলাদেশকে ৭৯তম দেশ হিসেবে এ স্বীকৃতি দেয়া হয়। বিশ্বের ৭৯তম সদস্য বিশিষ্ট দেশের এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান চার সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।বাংলাদেশের বিশ্ব অঙ্গনে ইতিবাচক ইমেজ গড়ে ওঠার পেছনে যে নামটি বারবারই আসে, তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনে বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের তালিকায় স্থান পান তিনি। ওই বছর রাজনীতি, ব্যবসা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের দিক থেকে সেরা ৫০ নেতার তালিকা প্রকাশ করা হয়, যেখানে প্রধানমন্ত্রী দশম স্থান পান। তিনি ওআইসি অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র নারী যিনি তালিকায় স্থান পান।
এবার কেবল এ দায়িত্ব নয়, জাতিসংঘের স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই মনোনয়নের বিষয়টি মেয়র আতিককে জানানো হয়।এর আগে ২০২১ সালে জাতিসংঘের মাদকদ্রব্যবিষয়ক কমিশন, ইউনিসেফ ও ইউএন উইমেনের নির্বাহী বোর্ডে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মাদকদ্রব্যবিষয়ক কমিশন (সিএনডি) ৫৩ সদস্যের একটি সংস্থা। কমিশনটি বৈশ্বিক মাদকদ্রব্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ, সরবরাহ ও চাহিদা হ্রাস বিবেচনা এবং রেজুলেশন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে এ বিষয়ক সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। এর সদরদপ্তর ভিয়েনায় অবস্থিত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ’র ভাষ্যমতে , বাংলাদেশের বিশ্ব অঙ্গনে যে পরিচিতি বেড়েছে, তাতে করে নানা ফোরামে দায়িত্ব নেওয়া, সদস্য হওয়াটাই স্বাভাবিক।তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে দেশ হিসেবে মর্যাদার জায়গায় পৌঁছেছে। বাণিজ্য সম্পর্ক বিভিন্ন দেশের সাথে বেড়েছে। ফলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ফোরামের সদস্য হওয়া অস্বাভাবিক না।তার এখন যে এগিয়ে যাওয়া তাতে করে বাংলাদেশ চাইবে বিভিন্ন ফোরামে যেন থাকা যায়। বর্তমান বিশ্বকাঠামোতে যত বেশি বন্ধুরাষ্ট্র হয়, তাতে বাংলাদেশের সুবিধাই হবে।’

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন