
মাহমুদুল হাসান ত্বকিঃ
বাঁশখালী, এক অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভূখণ্ড। পশ্চিমে সমুদ্রের শান্ত ঢেউ আর পূর্বে পাহাড়ের মাথায় আছড়ে পড়া মেঘের শোভা যেন এক মহিমান্বিত দৃশ্য। কিন্তু এই অপূর্ব দৃশ্যের অন্তরালে যে অন্ধকারে পড়া এক জনপদ বাস করছে, তা হৃদয় বিদারক। বাঁশখালী, যার প্রকৃতির সৌন্দর্য ঈশ্বরের অমূল্য রত্ন, অথচ উন্নতির পথে হাজারো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন হতে পারে, কেন এত সুন্দর এই অঞ্চল, তবুও শতাব্দীভর পিছিয়ে?বাঁশখালী, যেখানে নির্বাচন শব্দটি আসলেই অর্থহীন হয়ে পড়ে, সেখানে প্রভাবশালী নেতাদের টাকার দাপটে জনগণ ভোট দিয়ে নিজের ভবিষ্যতকে বিক্রি করছে। সঠিক ব্যক্তি নির্বাচিত না হওয়ায় জনকল্যাণের কোনো প্রভাব বাঁশখালীতে পড়ছে না, এবং এসব রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে এই জনপদ আরো এক ধাপ পিছিয়ে পড়েছে।এছাড়া, বাঁশখালী মেইন টাউনের রাস্তায় যানজট যে নতুন নয়, তা এক বিরল দৃষ্টান্ত। যেখানে কক্সবাজারে প্রবেশের জন্য বাঁশখালী উপজেলার মেইন রোড ব্যবহার করা হয়। বাঁশখালী উপজেলার জন্য চার লেনের পথ প্রয়োজন, সেখানে শুধুমাত্র এক লাইন রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা গাড়ির সারি দিনে দিনে জনগণের কষ্ট বাড়াচ্ছে। এই অনিয়মের চিত্র প্রতিদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।আরেকদিকে, বাঁশখালীতে ভূমীদস্যুদের দাপট যেন বিরাজমান, যাদের ক্ষমতার অপব্যবহারে সাধারন মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাদের হীনস্বার্থে আইন আর নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধভাবে জমি দখল করে নেওয়া এক গর্হিত কার্যক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে মানবিক সহানুভূতি যেন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত।শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাঁশখালীতে অপর্যাপ্ততা স্বীকার করতে হয়। এখানে কোনো আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, শিক্ষার মান অত্যন্ত নিম্ন, যার ফলে এখানে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের জন্য ভবিষ্যত অন্ধকার। প্রতিদিনের জীবনে তারা নতুন দিগন্তের দিকে না তাকিয়ে, অন্ধকারের দিকে এগিয়ে চলেছে।এটা স্পষ্ট যে, বাঁশখালীকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে হলে সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন। সঠিক এমপি, মেয়র, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তারপরই, বাঁশখালী এক নতুন আলোয় আলোকিত হবে, এবং উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।বাঁশখালীকে ফিরিয়ে আনতে হবে তার গৌরবময় অতীতকে, যেন এটি উন্নতির এক নতুন দিগন্তে পৌঁছায়। যদি সঠিক নেতৃত্ব, একতা এবং মানবিক মূল্যবোধের মেলবন্ধন ঘটতে পারে, তবে এই সুন্দর প্রাকৃতিক অঞ্চল আবারো তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে। কিন্তু, যদি তা না হয়, তাহলে বাঁশখালী চিরকাল পিছিয়ে থাকবে, তার অপূর্ব সৌন্দর্যের মাঝে হারিয়ে যাবে তার সুযোগ্য ভবিষ্যত।
