৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গাজীপুরে মেয়াদহীন নোংরা পণ্য বাজারজাত করছে ড্যান্ডি বেকারি

মোঃলিমন হোসেনঃ

কাপড়ের রং ও বিষাক্ত কেমিক্যাল এর মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে বিস্কুট, পাউরুটি, কেক, মিষ্টিসহ নানা রকমের খাবার । বেকারি পণ্যের নামে আসলে আমরা কী খাচ্ছি? বেশিরভাগ বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণেও রয়েছে চরম অব্যস্থাপনা।এছাড়াও পণ্য রাখার ঘর যেমন অপরিষ্কার। পোকামাকড়েও ভরপুর। সর্বোপরি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের নেই বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স, শুধু তাই নয় এক কোম্পানির বিএসটিআই এর লাইসেন্স কোড নাম্বার অন্য কোম্পানি নকল করে থাকে, মাঝেমধ্যে সাধারণ মানুষকে লোক দেখানোর অভিযান চালায় বিএসটিআই এবং ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর তবে এতে খুব একটা সমাধান হয় না । যেসব নির্দেশনা মেনে বেকারি চালু রাখার কথা তার কোন কিছুই তারা মানেন না, অনুমোদন ছাড়াই বেকারি পণ্যের উৎপাদন এখন নিয়মিত বিষয় হয়ে উঠেছে। ফলে মানব স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখন হুমকির মুখে ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ বেকারির নেই ট্রেড লাইসেন্স, বিএসটিআই, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ, স্যানিটারি ও ট্রেডমার্ক ছাড়পত্র। ফলে তদারকির অভাবে গাজীপুর মহানগরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে বেকারি। এসব খাদ্য মানবদেহের জন্য অত্যান্ত ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ।সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগরের আনাচেকানাচে অসংখ্য বেকারি গড়ে উঠেছে। সরকারি অনুমতি ছাড়াই মানহীন পণ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করছে এসব বেকারি। এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, কেক, পাউরুটি, মিষ্টিসহ নানা মুখরোচক পণ্য। স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে বেকারিসামগ্রী। বেকারিতে ব্যবহৃত জিনিসগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। শ্রমিকরা খালি পায়ে এসব পণ্যের পাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছেন। আটা-ময়দা প্রক্রিয়াজাত করার কড়াইগুলোও অপরিষ্কার ও নোংরা। ডালডা দিয়ে তৈরি করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ভন ভন করছে মাছির ঝাঁক। কয়েক দিনের পুরনো তেলেই ভাজা হচ্ছে পণ্যসমাগ্রী। অপরিচ্ছন্ন হাতেই প্যাকেট করা হচ্ছে এসব পণ্য। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বিভিন্ন ধরনের বেকারিসামগ্রী বাজারজাত করছে, উদাহরণস্বরূপ টঙ্গী গাজীপুরা সাতাইশ রোডে ড্যান্ডি বেকারি।অব্যবস্থাপনার কারণে এর আগেও একাধিকবার এই প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করেছে গাজীপুরের ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর তবে এসব জরিমানার করলেও তিনি আজও শুধরাননি, তার অপরাধগুলো এখনও চলমান, বেকারিটিতে রয়েছে শিশুশ্রম সহ আরো অনিয়মে জর্জরিত,সরকারি সংস্থাগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক এই অপকর্মগুলো করে যাচ্ছে ,এছাড়াও বেকারির পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় পচা ডিম, এসব অপরাধ যাতে সবার সম্মুখে ধরা না পড়ে তাই রাতের আধারি এসব কার্যক্রম চালায় এই প্রতিষ্ঠানগুলো, অন্ধকারে পণ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা বলেন, শুধু ক্ষতিকর রং নয়, দীর্ঘদিনের পোড়া তেল, পঁচা ও নষ্ট চিনির রস মেশানো হচ্ছে খাবারে। মনগড়াভাবে লেখা হচ্ছে উৎপাদন ও মেয়াদ উর্ত্তীর্ণের তারিখ দেয়, অনেক খাবারে আবার মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং উৎপাদনের মেয়াদ থাকেই না। ওজনেও দেয়া হচ্ছে কম। ক্ষুধার তাড়নায় নিম্ন এর মানুষগুলো ফুটপাতের দোকান থেকে রুটি কেক বিস্কুট খেয়ে তাদের ক্ষুধা নিবারণ করেন, এতে তাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে, এ বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল, নোংরা বেকারির খাদ্য পণ্য নিরাপদ মনে করে ‘বিষ’ কিনে খাচ্ছে মানুষ।অনেকেই বলছেন লোক দেখানো অভিযান আমরা দেখতে চাই না, আমরা চাই অনিবন্ধিত ও অনিয়ম গুলোর সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হোক। অনিয়ম ও দুর্নীতি সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠিন ভাবে আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত এমনটাই চাওয়া সাধারণ মানুষের।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন