
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট সদর উপজেলার সাতগাছি এলাকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগকে কেন্দ্র করে এক সনাতন হিন্দু পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মামলাটি যিনি করেছেন, তিনি এবং তার পক্ষের লোকজনই ঘটনার দিন ঐ পরিবারের উপর হামলা চালায়। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা এবং সংখ্যালঘুদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।মামলাটি করেন সাতগাছি এলাকার মোঃ আবুল আফিল (২৯), পিতা মোঃ ছফুর উদ্দিন। তিনি অভিযোগ করেন, তার ফেসবুক বন্ধু পরিতোষ চন্দ্র শীল ইসলাম ধর্ম এবং মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যা দেখে তিনি এবং অন্য মুসলিম যুবকরা ক্ষুব্ধ হন। এই অভিযোগে তিনি পরিতোষ চন্দ্র শীলসহ তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য এবং স্থানীয় আরও কয়েকজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর নাম উল্লেখ করে ২১ জুন ২০২৫ তারিখে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।অন্যদিকে, স্থানীয় সূত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অভিযোগকারী পক্ষ ফেসবুক পোস্টের কোনো প্রমাণ না দেখিয়েই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে মিছিল করে এবং ঐ দিন দুপুরে পরিতোষ চন্দ্র শীলের বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে মারধর করে ও ঘরে ভাঙচুর চালায়। তারা দাবি করেন, মিথ্যা অভিযোগ তুলে হামলার পর উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে।পরিতোষ পরিবারের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, অভিযুক্ত স্ট্যাটাসটির অস্তিত্ব এখনো কেউ দেখাতে পারেনি। বরং হামলার শিকার হওয়ার পর তারা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাইলেও উল্টো মামলার মুখে পড়েছেন। এতে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আইনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা বলছেন, ধর্ম অবমাননার অভিযোগকে হাতিয়ার বানিয়ে একটি চক্র বারবার তাদের টার্গেট করছে।এই বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা “মাসিক রুদ্র সংবাদ “-কে জানান;“ঘটনার দুই পক্ষের অভিযোগই আমরা গুরুত্ব সহকারে যাচাই করছি। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তদন্ত করছি এবং প্রমাণের ভিত্তিতে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
