৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

‘ব্র্যান্ড বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেক্সঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চামড়ার জুতা ও চামড়াজাত পণ্য শিল্পের ব্যবসায়ীদের এ খাতের জন্য ‘চামড়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ গঠনের ঘোষণার পাশাপাশি ‘ব্র্যান্ড বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের পণ্য আমাদের নিজের নামে বাজারজাত করা হোক। আমাদের দেশের নাম বাড়ুক। আমি চাই বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল হোক, বড় হোক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪র্থ বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদারগুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো (ব্লিস)-২০২৩ উদ্বোধনের সময় দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি অনেক দেশের অনেক পণ্য তারা এখান থেকে তৈরি করে নিয়ে গিয়ে নিজেদের দেশে ফিনিশিং দিয়ে নিজেদের নামে বাজারজাত করে। সেক্ষেত্রে আমরা নিজেরাও নিজেদের কিছু কিছু ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারি কিনা ’বাংলাদেশ ব্র্যান্ড’ হিসেবে আমার মনে হয় সেদিকেও নজর দিলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে আমাদের সরকারের কাছ থেকে সবধরনের সহযোগিতা পাবেন।
তিনি বলেন, আমি চাই আমাদের পণ্য আমাদের নামে বাজারজাত হোক। আমাদের দেশের নাম বাড়ুক। দেশের নাম সুন্দর হোক, বৃদ্ধি পাক। কেননা আওয়ামী লীগ সরকারের এই টানা তিন মেয়াদে তার সরকার অনেক খাতে অনেক সুযোগ করে দিয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের রপ্তানিকারকদের উচ্চ মূল্য সংযোজন করে বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের ও ক্রেতাদের ক্রয় আদেশ সম্পাদন সক্ষমতা এবং ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সুউচ্চ গুণগতমান সম্পূর্ণ বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বাংলাদেশ করছে।
তিনি বলেন, যেহেতু অর্থনৈতিকভাবে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে এবং আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষই এখন পণ্য ক্রয় করে। অতীতে যেখানে মানুষের পায়ে একটি রাবারের চপ্পলও ছিল না এখন কিন্তু সেটা আর দেখা যায় না। পাশাপাশি, সরকার রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন করে দেওয়ায় এখন আর কাদামাটি ঠেলেও বেশি চলতে হয় না।
তিনি বলেন, এবারের ব্লিস-এর থিম ‘পসেবল ইন বাংলাদেশ (বাংলাদেশেও সম্ভব)’ সম্প্রতি বছরগুলোতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়নমূলক রূপান্তর ঘটেছে তা এতে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। উদ্যোক্তাদের এজন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
আমি বিশ্বাস করি এই বাংলাদেশও সম্ভব, বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অ্যাডভান্সড ম্যানুফ্যাকচারিং গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জোনাথন ববেট এবং গোল্ডেন চ্যাং গ্রুপের বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠাতা জেমস হো।স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) যৌথভাবে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ১২ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ব্লিস এর শেষ তিনটি প্রদর্শনী ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।উদ্যোক্তারা জানান, ব্লিস-২০২৩ ক্রেতা, ব্র্যান্ড এবং সোর্সিং প্রতিনিধিদের জন্য একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে যা বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যের শীর্ষস্তরের নির্মাতা এবং রপ্তানিকারক, পাদুকা প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারক এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের সাথে সংযোগ স্থাপন করবে এবং বর্তমান বিনিয়োগের সুযোগ ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি কার্যকর নেটওয়ার্কিং, ব্যবসায়িক উন্নয়নের সুবিধা দেবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে চামড়া শিল্পে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রথমত, বাণিজ্যিক খামার সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং গবাদি পশু পালনে বিপ্লব ঘটেছে, যার ফলে দেশ কোরবানির মৌসুমেও গবাদি পশুর চাহিদা পূরণে যথেষ্ট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে বছরে ২.৫ মিলিয়ন গবাদি পশু উৎপাদিত হচ্ছে।তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, মাত্র এক দশক আগে দেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগই আসত কাঁচামাল হিসেবে চামড়া রপ্তানি থেকে, কিন্তু সরকারের প্রণোদনা ও নীতিগত সহায়তায় উচ্চমূল্য সংযোজন পণ্য উৎপাদন যেমন পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য শিল্পের সম্প্রসারণ হয়েছে। এখন এ খাতের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৯৩ শতাংশ আসছে পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য থেকে।
তৃতীয়ত, হাজারীবাগের পরিবেশগত সমস্যার সমাধানে আমাদের সরকারই সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়ে ট্যানারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিপূর্ণভাবে সাভারে আধুনিক শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করেছে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন