৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দিতে বিশেষ শাখা খুলেছে আইন মন্ত্রণালয়

নিউজ ডেক্সঃ
ফখরুল বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনের নামে সরকার যা করছে, তা বেআইনি সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়। অবিলম্বে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জোর দাবি জানাই
বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া “মিথ্যা ও গায়েবি” মামলার দ্রুত বিচার করতে আদালতকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে দলটি।দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত কয়েক মাসে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা হওয়ার পরিসংখ্যান তুলে ধরে এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেছেন, “জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনের নামে সরকার যা করছে, তা বেআইনি সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়। অবিলম্বে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জোর দাবি জানাই।”
বুধবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারর্পাসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত কয়েক বছরে সরকার প্রায় ৭০০ বিরোধী নেতাকর্মীকে গুম, সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে খুন, প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার “মিথ্যা ও গায়েবি” মামলা করে নিপীড়ন ও জুলুমের যে নিকৃষ্ট রেকর্ড স্থাপন করেছে, তা বিশ্বে নজিরবিহীন।আরও জানানো হয়, গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির ১৫ নেতাকে চার বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে ৯ বছর, চেয়ারর্পাসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য আমান উল্লাহ আমানকে ১৩ বছর, তার স্ত্রীকে ৩ বছর, দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে ৪ বছর, চেয়ারর্পাসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে ৪ বছর, দলের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ৭০ বছর, দলের সহ-গ্রামসরকার বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম এবং সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকনসহ ১৫ জন নেতা-কর্মীকে ৪ বছর করে, রাজশাহী জেলা বিএনপি সভাপতি আবু সাঈদ চাঁদকে ৩ বছর, যুবদল নেতা ইসহাক সরকারকে ২ বছর এবং ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রেজাওয়ানুল হক সবুজকে ২ বছরসহ যুবদল, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কিছুদিন আগে সাতক্ষীরায় ও ঈশ্বরদীতে দলের ও অঙ্গসংগঠনের বহু নেতাকর্মীর ফাঁসি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।বিএনপির মহাসচিব বলেন, এর বেশির ভাগ রায়ই হয়েছে গত দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে। অতি দ্রুত সাজা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিদিনই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মামলার শুনানি চলছে।ফখরুল বলেন, “নিশিরাতের সরকার শুধু খালেদা জিয়াকেই একটার পর একটা বানোয়াট অভিযোগে কারাদণ্ড দিচ্ছে না, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকেও তার অনুপস্থিতিতে কয়েকটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় কারাদণ্ড দিয়েছে। এমনকি তার স্ত্রী রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকা সত্ত্বেও শুধু জিয়া পরিবারের সদস্য হওয়ার অপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন।”
সম্প্রতি বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, “পুলিশের পাশাপাশি ডিবি এ ব্যাপারে অধিক তৎপর। স্বাভাবিক দলীয় শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ড, এমনকি গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে আগের কোনো গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়া সত্ত্বেও জামিন দেওয়া হচ্ছে না। উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্তরা নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে গেলেই জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।ফখরুল অভিযোগ করেন, “কারাগারে বন্দীদের ওপর নিপীড়ন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি কক্ষে দ্বিগুণ-তিনগুণ বন্দীকে গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে। ১৫ দিনের আগে তো নয়ই, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৫ দিন পরেও বন্দীদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজন দেখা করতে পারেন না। দর্শনার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার নিত্যই ঘটছে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন