৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শীতে কাবু শিশুরা, বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ

মাসুদ পারভেজঃ

নিউমোনিয়া নিয়ে নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা ফারজানা আক্তার ৮ মাসের শিশুকে নিয়ে ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। চারদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পরও তেমন উন্নতি নেই।এখনও চিকিৎসকের পরামর্শে চলছে চিকিৎসা।একই অবস্থা দুই বছরের শিশু তাসিফের।দুইদিন ধরে ডায়রিয়াজনিত রোগ নিয়ে চিকিৎসাধীন এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইউনিট-২ এ। প্রায় প্রতিদিনই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা।চমেক হাসপাতাল শিশু ওয়ার্ড এর তথ্যানুযায়ী, নতুন বছরের প্রথম ১৪ দিনে পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ১ জানুয়ারি ৪১ জন, ২ জানুয়ারি ৪৮ জন, ৩ জানুয়ারি ৪১ জন, ৪ জানুয়ারি ৩৫ জন, ৫ জানুয়ারি ৪০ জন, ৬ জানুয়ারি ৪৪ জন, ৭ জানুয়ারি ২১ জন, ৮ জানুয়ারি ৪৩ জন, ৯ জানুয়ারি ৪১ জন, ১০ জানুয়ারি ৪৫ জন, ১১ জানুয়ারি ৪৪ জন, ১২ জানুয়ারি ৪০ জন, ১৩ জানুয়ারি ৩৬ জন এবং ১৪ জানুয়ারি ৫৪ জন শিশু ভর্তি হয়েছে।ভর্তি হওয়া বেশিরভাগই আক্রান্ত ঠাণ্ডাজনিত রোগে।শুধু চমেক হাসপাতাল নয়, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতালসহ সব বেসরকারি হাসপাতালেও বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা।চমেক হাসপাতাল শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সোমা দাশ বলেন, শীত মৌসুম আসলেও রোগীর ভিড় তেমন একটা নেই। যেহেতু তীব্র শীত মাত্র পড়া শুরু করেছে, আরও কয়েকদিন পরে হয়তো এর প্রভাব দেখা যাবে।স্বাভাবিক সময়ে হাসপাতালে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি থাকে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ওই পরিমাণ রোগী ভর্তি হচ্ছে।চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে এই সময় বাচ্চাদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শিশু ওয়ার্ডের সহযোগী অধ্যাপক জেবিন চৌধুরী বলেন, এই সময়টায় শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগ হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। শিশুদের ঠিকমতো যত্ন নিলে এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ালে সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি জটিলও হয়ে যেতে পারে।তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই একমাস থেকে ৬ মাস বয়সী শিশু। ঠাণ্ডা লাগার পর হাসপাতালে আসতে দেরি করার কারণে অনেক শিশুর অবস্থা জটিল হয়ে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই শিশুদের জ্বর সর্দি হলেও কোনোভাবে অবহেলা করার সুযোগ নেই।চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, শীতের সময় হাসপাতালে রোগীর চাপ একটু বেশি থাকে। বিশেষ করে শিশু ওয়ার্ডে। আমাদের সব রকমের প্রস্তুতি রয়েছে।এ সময় তিনিও শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নিতে অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দেন।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন