২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

বিপ্লব কান্তি নাথঃ
ঢাকের বাদ্য আর আবীর খেলার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দশদিন আগে মহালয়ার মধ্য দিয়ে মণ্ডপে মণ্ডপে এই পূজার উৎসব শুরু হয়েছিল। আর মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বিজয়ী দশমীতে বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জনে শাস্ত্রীয় সমাপ্তি হলো দুর্গাপূজার। বিকেল থেকে শুরু হয় প্রতিমা নিরঞ্জনের পালা।চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে প্রতি বছরের মতো এবারও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর থেকেই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন স্থনে থেকে আসা কয়েক শতাধিক মন্ডপের প্রতিমা নিরঞ্জন দেয়া হয়েছে বলে জানান পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার মধ্যে যাতে বঙ্গোপসাগরে সুষ্ঠু ও শান্তি শৃঙ্খলার মধ্যে পূজারীগণ প্রতিমা নিরঞ্জন করতে পারেন সে লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আলোকবাতি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সাজসজ্জা, মঞ্চ নির্মাণ, মাইকিং, পানীয় জলের ব্যবস্থাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।এদিকে, চসিক মেয়র রেজাউল ও উপমন্ত্রী নওফেল বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও বৃষ্টিতে ভিজে প্রতিমা নিরঞ্জন কার্যক্রম তদারকি করেন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন,‘চট্টগ্রাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম পাদপীঠ। এই নগরীতে জাতিগত কোন ভেদাভেদ নেই। শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তি-শৃংখলার সাথে সম্পন্ন হওয়া তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
মেয়র তার বক্তব্যে বলেন, “শেখ হাসিনা দেশে সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা যে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তার একটি প্রমাণ হল কোন সমস্যা ছাড়াই সারা দেশে পুজা উদযাপন হয়েছে। এজন্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের যে অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা শিক্ষা দিয়েছেন, সে শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে অসাম্প্রদায়িকতা ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রার জন্য কাজ করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল পাদপীঠ হিসেবে চট্টগ্রামের যে ঐতিহ্য তা রক্ষা করতে হবে।’
নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দুপুর থেকেই পূজারী ও ভক্তরা শ্রদ্ধার সাথে তাদের প্রতিমা নিরঞ্জন দেবার জন্য গাড়িতে করে প্রতিমা নিয়ে আসেন। এলাকায় হাজার হাজার ভক্ত ও পূজারীর উপস্থিতিতে কোথাও তিল মাত্র ঠাঁই ছিল না। সুন্দর পরিবেশে সুশৃংখলভাবে প্রতিমা বিসর্জন করতে পেরে পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং হাজার হাজার পূজার্থী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কাজ করতে হবে কাধে কাধ মিলিয়ে।
এসময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, কাউন্সিলর ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী, নুরুল আমিন, আবদুস সালাম মাসুম, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের কর্মকর্তাবৃন্দ ও চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিল খুবই সতর্ক অবস্থানে। পুলিশ –র্যা ব ও অন্যান্য আইশৃঙ্খলা বাহিনী সমানভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
উক্ত নিরঞ্জন অনুষ্ঠানে এবার সাধারণ দর্শক সংখ্যা কম লক্ষ্য করা গেছে, বৈরী আবাহাওয়ার কারণে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন