৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দুই বছরের অধিক সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অযোগ্য: হাইকোর্ট

নিউজ ডেক্সঃ
দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের বেশি দণ্ডিতদের দণ্ড বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দণ্ড স্থগিতের সুযোগ নেই বলেও রায় দেন উচ্চ আদালত।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত ৫ বিএনপি নেতার আবেদন খারিজ করে রোববার (২২ অক্টোবর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর দেয়া রায়ে ৪৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।আবেদনকারী ওয়াদুদ ভুইয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফখরুল ইসলাম, মো. আব্দুল ওহাবের পক্ষে ছিলেন মো. ওয়াজেদ আলী, মো. মশিউর রহমানের পক্ষে ছিলেন মো. আমিনুল হক, কেএইচ বাহার রুমি ও মাহবুব শফিক, এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে ছিলেন রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করিম, খায়রুল আলম চৌধুরী, তানভীর হোসেন খান এবং আমান উল্লাহ আমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.আরিফুল ইসলাম।রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, তৎকালীন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও এ কে এম ফজুলল হক খান।রোববার খুরশীদ আলম খান বলেন, নৈতিক স্খলনের মামলায় দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের অযোগ্য হবেন। সংবিধানের এ সংক্রান্ত ৬৬ (২) (ডি) এর ব্যাখ্যা দিয়ে আদালত একটি রায় দিয়েছেন। রায়ে বলেছেন, সাজা কখনও স্থগিত হয় না। দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কিছু ব্যক্তি বিচারাধীন আপিলে একটি দরখাস্ত দিয়েছেন সাজা স্থগিতের জন্য। কারণ স্থগিত না হলে তারা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সেটার ব্যাখ্যা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দণ্ড বহাল থাকবে। কাজেই সাজা কখনও স্থগিত হয় না।

সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি (ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’

এই ৫ আবেদনকারীর বিষয়ে বলা হয়েছে, তাদের জামিন দেয়া হয়েছে, তবে এটি বলা যায় না যে তারা খালাস পেয়েছেন বা তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বা তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে বা শেষ পর্যন্ত তারা দোষী সাব্যস্ত ও সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন। সুতরাং সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ডিতদের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা উপযুক্ত আদালতে বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।আপিল আদালতে কারও জামিন হলে অথবা কোনোভাবে সাজা স্থগিতের আদেশ হলে দণ্ডিতদেরকে সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্যতার দায় থেকে অব্যাহতি দেয় না।

আদালত আরও বলেন, যেহেতু সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী, আবেদনকারীরা সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা অংশগ্রহণের অযোগ্য, তাই তাদের দণ্ডাদেশ স্থগিত করার কোনও সুযোগ নেই।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন