
রতন রায় রাজারহাট প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রাম জেলায় এবছর ৪৮৪টি মন্দিরে দূর্গা পুজা অনুষ্ঠিত হবে। কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলায় ১১৬ টি মন্দিরে দূর্গাপুজা উদযাপন হবে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। এ দূর্গোৎসবকে ঘিরে শেষ মুহূর্তে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা।শেষ মুহূর্তে মৃৎশিল্পীদের যেন দম ফেলার সুযোগ নেই। কাজের চাপে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বাঁশ, খর ও কাঁদামাটি দিয়ে প্রতিমার অবকাঠামোতে ও প্রলেপ দেওয়ার প্রাথমিক কাজ শেষ পর্যায়ে। পরম যত্নে দেবীর মুকুট, হাতের বাজু, গলার মালা, শাড়ি নকশা, প্রিন্ট ও ঠাকুরের চুল তৈরি করছেন। এরপর প্রতিমায় দেওয়া হবে রং তুলির আঁচড়।রাজারহাট উপজেলার মৃৎশিল্পী রিপন চন্দ্র বর্মন জানান, এ বছর ৮টি প্রতিমার তৈরির অর্ডার পেয়েছি। সঠিক সময়ে প্রতিমা ডেলিভারি দেওয়ার জন্য চার থেকে পাঁচজন সহযোগী নিয়ে রাত দিন জেগে কঠোর পরিশ্রম করছি। বর্তমানে বাঁশ, রশি, খর, মাটি ও রংয়ের দাম বাড়লেও সে হারে দেবিমূর্তির দাম বাড়েনি। প্রতিটি প্রতিমার ১৩/১৫ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা দরে চুক্তি হয়েছে। সহযোগীদের মজুরী ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে প্রতিটি প্রতিমা তৈরীতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় হবে। এ শিল্প থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম থেতে হচ্ছে।রাজারাট উপজেলা মৃৎশিল্পী ও জগদীশচন্দ্র রায়,জানান, আমি প্রায় ৩০ বছর যাবত এ কাজের সঙ্গে জড়িত, প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ধরে কাজ করছি। তবে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। একদিকে সুতা বাঁশ-কাঠের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ভিন্ন পেশায় অভিজ্ঞতা না থাকায় বাধ্য পরিবারের সকলকে নিয়ে কাজ করছি। এবছর ১২ টি প্রতিমা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি রবি বোস জানান, এ বছরেও ৪৮৪টি পূজা মণ্ডপের শারদীয় দূর্গোৎসব শান্তির্পূণভাবে পালিত হবে। আগামী ৯ অক্টোবর বুধবার মহা ৬ষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ১২ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত বিজয়াদশমী মধ্য দিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী এ দূর্গোৎসব পালিত হবে। এ বছর মা দেবী দূর্গা দোলায় আগমন ও ঘটকে গমন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খাদিজা বেগম জানান, এ বছর দূর্গা পূজা মণ্ডপগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে আনসার বাহিনী থাকবে। এছাড়াও পুলিশ, র্যাব বাহিনীসহ আয়োজক কমিটির সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান জানান, এবছর ৪৮৪টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের বিশেষ টিমের পাশাপাশি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে।
