৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রাজশাহীতে অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিকের ছড়াছড়ি, বেড়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য

রাজশাহী প্রতিনিধি:

রাজশাহীতে অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নেই পর্যাপ্ত লোকবল, নেই মেশিনারি, নেই অনুমোদন, তবুও দালাল মারফত প্রতিনিয়ত চলছে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা। বিভিন্ন গণমাধ্যম অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অব্যবস্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে । কিন্তু এই নিয়ে কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা দেখা যায়নি কখনও। নিয়ম অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনের কথা থাকলেও তা ঠিকমতো নজরদারির আওতায় আসেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকার পরও নিরব ভূমিকায় আছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিভিল সার্জন অফিস।৭ছগত বছর স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনার পর রাজশাহী বিভাগে ১৩৫ টি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তদারকির অভাবে সেগুলো এখন চলমান। অনেকেই আবার নাম পরিবর্তন করে পূর্ণরায় চালাচ্ছেন সেসব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ব্লাক লিস্ট থেকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে এখনো বহাল তবিয়তে তারা। নিয়মিত রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে কাজ করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আছে নিরব ভূমিকায়।অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর লক্ষীপুরে প্রত্যাশা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও লাইফ গার্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক দুটি প্রতিষ্ঠানে প্রতারণা ফাঁদ পাতা হয়েছে। দালালরা গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল সাধারণ মানুষজনকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা কথা বলে এসব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে তারা প্রতারিত হচ্ছে।দালাল মারফত প্রত্যাশা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বের হওয়া ভুক্তভোগী রোগী বলেন, আমাকে ইসলামি হাসপাতাল-২ নামে এই প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা হয়। এখানে চিকিৎসক নাই। অন কলেও চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। পরে বুঝতে পারি এখানে ডাক্তাররা বসে না। তাই আমি বের হয়ে চলে যাচ্ছি। এরকমই অনেক রোগীকে দালালরা ধরে নিয়ে গিয়ে ভুয়া রিপোর্ট ও ভুয়া ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।( ভুক্তভোগীর রেকর্ড সংরক্ষিত)মঅপরদিকে অসহায় রোগী প্রতারিত হলেও দালালরা প্রকাশেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। লাইফ গার্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৩০ জন দালাল দ্বারা রোগী ধরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছেন। দালালদের দৌরাত্ম্য বাড়লেও প্রশাসন নিরব ভূমিকায় আছে। এর আগে র‍্যাব-পুলিশ যৌথ অভিযানে দালাল গ্রেফতার করলেও এখন তার বালাই নাই। প্রশাসন ম্যানেজ করেই প্রকাশেই প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, শুধুমাত্র রাজশাহীর লক্ষীপুরে এরকম অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে যাদের পর্যাপ্ত লোকবল, চিকিৎসকসহ নেই বৈধ কাগজপত্র। দালাল নির্ভর ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো এখন প্রতারণার ফাঁদ মাত্র।সমলফোন দিয়ে এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা: আবু সাঈদ সব কথা শুনে বলেন, আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি। পরে ফোন দিতে বলে লাইন কেটে দেন।এ বিষয়ে কথা বললে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা: আনোয়ারুল কবীর বলেন, এরকম হওয়ার কথা নয়। আমরা রুটিন ওয়ার্ক অনুযায়ী সব কিছু তদারকি করি। এর আগে যাদের বন্ধ করা হয়েছিলো তাদের কাগজ পত্র ঠিক ছিলো না। কাগজপত্র ঠিক করার পর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এরকম কাজে লিপ্ত হয় বা সাধারণ রোগীদের হয়রানি বা প্রতারণা করে তাহলে তা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উল্লেখ, সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী রোগীদের সঙ্গে কথা বলতেই প্রত্যাশা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শরীফ নামে একজন এসে বলেন ফোনে আসাদ নামে আমার এক সাংবাদিক ভাই আছে তার সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলার কি প্রয়োজন জানতে চাইলে তিনি বলেন একটু কথা বলেই দেখন না। এরপর ফোনের ওপারে আসাদ নামে একজন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে বলেন,ওখান থেকে চলে যাও তোমরা। সে আমার ভাই হয়।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন