৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবপাচারকারী চক্রের তিন সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সম্প্রতি এই চক্রটির সদস্যরা বাংলাদেশি পাঁচ নাগরিককে মিয়ানমারে জিন্মি রেখে মুক্তিপণ দাবি করেছে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী।

গ্রেফতাররা হলেন- উখিয়া উপজেলার শফিউল্লাহকাটা ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৩ ব্লকের বাসিন্দা মৃত দিল মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ ছাবের (২৬) ও একই এলাকার কেফায়েত উল্লাহ’র মেয়ে আরাফা বেগম (৩৭) এবং উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের গয়ালমারা এলাকার মোহাম্মদ আলীমের ছেলে মোহাম্মদ শারমিন (২৫)।মানব পাচারকারী চক্রের গ্রেফতার সদস্যদের কর্তৃক পেকুয়া উপজেলার হোসাইনাবাদ এলাকার মো. হেলাল উদ্দিনসহ পাঁচজন পাচারের শিকার হয়েছেন বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।ভুক্তভোগী স্বজনদের অভিযোগের বরাতে আবু সালাম বলেন, পাচারের শিকার পেকুয়া উপজেলার হোসাইনাবাদ এলাকার মো. হেলাল উদ্দিন পেশায় একজন কৃষক। তিনি পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানের বরজে কাজ করতে যেতেন। এই সুবাদে তার সঙ্গে মানব পাচারকারী চক্রের কতিপয় সদস্যদের পরিচয় ঘটে। চক্রটির সদস্যরা উন্নত জীবন ও উচ্চ বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে হেলালসহ পেকুয়ার আরও কয়েক যুবককে। মালয়েশিয়ায় পৌঁছে চুক্তির টাকা পরিশোধেরও প্রস্তাবনা দেয় চক্রটি।‘এক পর্যায়ে গত ৮ অক্টোবর ভোরে হেলালসহ যুবক সাগরপথে মালয়েশিয়া যাত্রার উদ্দ্যেশে বাড়ি থেকে রওনা হয়। পরে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এসব যুবককে ট্রলারে তোলার পর সাগরপথে মালেয়েশিয়ার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়।’

গ্রেফতার যুবকদের স্বীকারোক্তির বরাতে র্যাবের এ জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক বলেন, ‘ট্রলার যোগে সাগরের দীর্ঘ দুর্গম পথে পাচারের শিকার যুবকরা কাতর হয়ে পড়ে। পরে তারা দেশে ফিরতে কাকুতি-মিনতি শুরু করলে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাদের মিয়ানমারের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জিন্মি করে রাখে।’এরপর মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ভুক্তভোগী স্বজনদের কাছে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমুতে মারধরের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে ভুক্তভোগীদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়’, বলেন আবু সালাম চৌধুরী।তিনি জানান, রোববার মধ্যরাতে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছে খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ৬/৭ জন লোক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
সোমবার দুপুরে গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান আবু সালাম চৌধুরী।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন