৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কাশিয়ানীতে এতিমদের ভুয়া তালিকা দেখিয়ে বছরের পর বছর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ভুয়া এতিম দেখিয়ে বছরের পর বছর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে মহেশপুর ইউনিয়নের হিরণ্যকান্দী মাদরামা এতিমখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতিমখানায় বর্তমান মাত্র ২ জন এতিম শিশু আছে। কিন্তু গত তিন বছরে সব মিলিয়ে ১৮ লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।বুধবার (৫ মার্চ) সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, হিরণ্যকান্দী মাদরামা এতিমখানায় ২ জন এতিম শিশু আছে। সরকারি খাতায় ১৭০ জনের নাম থাকলেও বাস্তবে রয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ জন শিশু। এর মধ্যে ৩৭ জনের প্রত্যেকের বাবা-মা আছেন বলেও স্বীকার করেছে শিশুরা। এই ৪৫ থেকে ৫০ জনের ভিতর ৪০ জনের মাসিক বেতন ও গ্রাম থেকে চাল ও কালেকশন করা হয়।এদিকে সমাজসেবা অফিস থেকে প্রতি ছয় মাস পর পর ৫০ জন এতিমের সরকারি ক্যাপিটেশন গ্রান্ট উত্তোলন করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সমাজসেবা অধিদপ্তরের বক্তব্য অনুযায়ী ইতোপূর্বে বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার শোকজ করা হয়েছে। গত তিন বছরে সব মিলিয়ে ১৮ লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করেছেন তারা।স্থানীয় নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছু একজন জানান, এতিমখানাটি শুরু থেকে খেয়াল করেছি। এখানে এতিম নেই বলেই চলে । এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ক্যাপিটেশন গ্রান্টের টাকা নেওয়ার জন্য নামে মাত্র ৫০ জন ভুয়া এতিম দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোপূর্বে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে শোকজ করেছিল তাদেরকে। ওখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের লোকজন পরিদর্শন করতে গেলে পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসা থেকে বাচ্চাদের ভাড়া করে নিয়ে আসে বলে জানায়।

এতিমখানার মুহতামিম মোঃ ইলিয়াস বলেন, আমার মাদ্রাসায় সব ঠিকঠাক আছে। বর্তমান ১৭০ জন এতিম ই আছে । সরকারি ক্যাপিটেশন গ্রান্টের টাকা যে কয় বার টাকা দিছে সেই কয় বার টাকা উঠাইছি, মোট বার টাকা উঠাছি তা আমার মনে নাই।ভুয়া এতিম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাশিয়ানী সমাজসেবা অফিসার শেখ বজলুর রশিদ স্যারের কাছে থেকে আপনি জেনে নেন, আমার সব ঠিক আছে। ভুয়া এতিম দেখিয়ে অর্থ আত্নাসাৎ করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সব ঠিক আছে, আপনি সমাজসেবা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ করুন।কাশিয়ানী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শেখ বজলুর রশিদ জানান, কিছু দিন আগে এতিমখানা কর্তৃপক্ষকে শোকজ করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বারবার নজরদারি করা হচ্ছে। বাস্তবে সেখানে ২ জন বাচ্চা থাকলেও তারা খাতা কলমে ভুয়া এতিম দেখিয়ে সরকারি টাকা উত্তোলন করেন। কয়েক বছর এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত ক্যাপিটেশনের টাকা কাগজ-কলমে এতিম দেখিয়ে উত্তোলন করে আসছে। বাস্তবে পরিদর্শন করতে গেলে পার্শ্ববর্তী মাদরাসা থেকে বাচ্চাদের খেতে দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে আসে। এভাবেই চলছে তাদের কার্যক্রম।উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা জান্নাত বলেন, এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করতে আসেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন