২৫শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে টাকা নিয়ে চাকুরী দেয়ার নামে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

সুজন কুমার রায় কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে চাকুরী দেয়ার প্রলোভনে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে টালবাহানা করার অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসা প্রধানের বিরুদ্ধে। সোমবার (১ এপ্রিল ২০২৪) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী।অভিযোগে জানা গেছে,কুঠিবাড়ী ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ আমিনুল ইসলাম (৪৫) তার প্রতিষ্ঠানে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের সাইফুর রহমানের স্ত্রী মোছাঃ আফরোজা বেগমকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিবেন বলে তার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন। সেখানে আমিনুল ইসলাম ১৫ লাখ টাকার কথা বললেও আফরোজার পরিবার ১৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। পরে মাদ্রাসার সভাপতি সুফিয়ার রহমান ও কমিটির সদস্য মোঃ আক্কাস আলীর উপস্থিতিতে তিন কিস্তিতে ১১লাখ টাকা নেন আমিনুল ইসলাম। টাকা নেওয়ার পর আফরোজা বেগমের স্বামী ও স্বামীর বড় বোনের নামীয় ০৩ শতক জমি মাদ্রাসা সংলগ্ন হওয়ায় তা মাদ্রাসার নামে লিখে দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। তখন চাকুরী হওয়া সাপেক্ষে জমি দিতেও রাজি হন ভুক্তভোগীর পরিবার।ঘটনার পর বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চাকুরীতে যোগদান না করিয়ে আফরোজা বেগমেকে টালবাহানায় ফেলে দেন। পরে নিয়োগের জন্য চাপ দিলে গত ২৭ মার্চ পত্রের মাধ্যমে জানায় ৩০ মার্চ তারিখ সকাল সাড়ে নয়টায় সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার অফিস রুমে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তার আগেই ২৯-০৩-২০২৪ তারিখ রাত সাড়ে আটটার দিকে ভুক্তভোগীকে সভাপতির বাড়িতে ডাক দিয়ে নিয়ে এসে সদস্য আক্কাস আলীর উপস্থিতিতে মৌখিকভাবে পরিক্ষার স্থান ও সময় পরিবর্তন করে ৩০-০৩-২০২৪ তারিখ সকাল নয়টায় নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বড় রংপুরে কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসা, মাহিগঞ্জ রংপুর এ উপস্থিত থাকতে বলেন। পরে আফরোজা বেগম সেখানে সকাল এগারোটা পর্যন্ত উপস্থিত থেকে নিয়োগ পরীক্ষার পরিবেশ না পেয়ে বিফল হয়ে ফেরত আসেন।আফরোজা বেগম জানান,আমি দর্জির কাজ করে কোনোভাবে সংসার চালাই বাড়ির পাশে মাদ্রাসা হওয়ায় মাদ্রাসার সুপার আমাকে আমার দোকানে চাকরি দেওয়ার কথা বললে, আমার সম্বল বিক্রি করে সুপারকে আমি ১০ লক্ষ টাকা দেই এবং চাকরি পেলে মাদ্রাসায় ৩ শতাংশ জমি দেয়ার জন্য রাজি হই, টাকা নিয়ে চাকুরি না দিয়ে সুপার মহোদয় আমার সাথে প্রতারণা করতেছে, এখন শুনতেছি আরও তিন চারজনের কাছে আমার চেয়ে বেশি টাকা গ্রহণ করেছে।মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আক্কাস আলী জানান, সভাপতির বাড়িতে আমার উপস্থিতিতে আফরোজার পরিবার মাদ্রাসার সুপারের হাতে টাকা ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পরে সুপার সে টাকা সভাপতির হাতে দিয়েছে। পরে আবারও বিভিন্নভাবে টাকা লেনদেন করা হয়।কুঠিবাড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আমিনুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ না খোঁজ করে দিয়ে বলেন,নিয়োগের ব্যাপারে কারো সাথে টাকা পয়সা লেনদেন করিনি। নিয়োগ পরীক্ষার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান রংপুরে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমি যাইনি আমি ডিজির প্রতিনিধির সাথে সভাপতিসহ দেখা করতে গিয়েছি।মাদ্রাসার সভাপতি সুফিয়ার রহমান মুঠোফোন জানান, আমরা পরীক্ষা নেয়ার জন্য রংপুরে এসেছি কিন্তু একটু সমস্যার কারণে পরীক্ষাটি নিতে পারিনি, টাকা লেনদেনের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেও জানান।উপজেলা মাধ্যমিক মাধ্যমিক অফিসার কামরুল ইসলাম জানান,এ বিষয়ে আফরোজা বেগমের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ,রেহেনুমা তারান্নুম জানান একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন