৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

উল্টে পাল্টে বিভিন্ন ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই শিশুরা

নিউজ ডেক্সঃ

পাতা উল্টে বিভিন্ন ছবি সম্পর্কে বাবাকে জিজ্ঞেস করছেন জান্নাতুল মাওয়া। বিজ্ঞান ও আবিষ্কার বিষয়ক বইয়ে তার আগ্রহ বেশি। চোখে-মুখে কৌতূহল। স্পুটনিক-৭ মহাকাশযানের ছবি দেখিয়ে শিশু জান্নাতুল জানতে চাইল, এটা কী? উত্তর শোনার মত অবসরও তার হাতে নেই। পৃষ্ঠা উল্টে বৃহস্পতি গ্রহের ছবি দেখিয়ে আবারও একই প্রশ্ন। পৃথিবীসহ কয়েকটি গ্রহ সম্পর্কে তারও জানা আছে। ফলে নিজের প্রশ্নের উত্তরও নিজেই করছে জান্নাতুল।শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) বাবা আব্দুর রউফের হাত ধরে শিশু প্রহরে মেলায় এসেছে জান্নাতুল মাওয়া রাহী। গল্পে-ছড়ায় তার আগ্রহ নেই। পাশ থেকে আব্দুর রউফ কয়েকটি গল্পের বই এগিয়ে দিলেন। সেসব সরিয়ে জান্নাতুল খুললেন আলী ইমামের ‘মহাবিশ্ব ও মহাকাশ: বিচিত্র রহস্য’ বইটি। মেলা ঘুরে আশিক মুস্তফার ‘ওকাবোকা’সহ তিনটি বই কিনেছে সে।বইমেলায় তার যেন আনন্দ-উৎসাহের শেষ নেই। জানতে চাইলে জান্নাতুল বাংলানিউজকে বলেন, আব্বুর সঙ্গে এসেছি। মজা লাগছে। হালুম, ইকরি, টুকটুকি দেখেছি।শিশুর উচ্ছ্বাস আর কৌতূহল দেখে খুশি আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, বাচ্চাকে নিয়ে এসেছি। সে দেখে দেখে অনেককিছু শিখবে। তবে তার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি না।শুধু জান্নাতুল নন, শনিবার শিশুপ্রহরে অমর একুশে বইমেলায় ভিড় করেছেন শিশু-অভিভাবকরা। কেউ এসেছেন বাবা কিংবা মায়ের সঙ্গে। কেউ এসেছে পুরো পরিবার নিয়ে।

মেলায় শিশুচত্বর ঘুরে দেখা যায়, স্টলের সামনে ভিড় করছে খুদে পাঠকরা। বিভিন্ন বই উল্টেপাল্টে দেখছে তারা। তাদের আগ্রহ বেশি রঙিন ও চিত্র ভর্তি বইয়ে।শিশুদের আকর্ষণ করতে শিশু চত্বরে রাখা হয়েছে কার্টুনের মাসকট অভিনেতা। সেখানেও লেগেছে শিশুদের জট। কেউ মাসকটকে জড়িয়ে ধরছেন, কেউ তুলছেন ছবি।মায়ের হাত ধরে মেলায় এসেছেন সারিতা নাওয়ার। গল্পের বইয়ে তার আগ্রহ বেশি। মায়ের কাছে বাঘের ছবিসহ একটি গল্পের বইয়ের আবদার তার। জানতে চাইলে সে বলেছে, বাঘ সুন্দর লাগে। বাঘের ছবিসহ একটা গল্পের বই কিনব।বাবার সাথে মেলায় এসেছে তিয়ানা। ঠাকুমার ঝুলি ও সিসিমপুরের মতো গল্পে তার আগ্রহ বেশি। মেলায় ছেলেকে নিয়ে এসেছেন রফিক। বিক্রয়কর্মীকে তিনি বলছেন, বইয়ের ছবিগুলো যেন বড় হয়, এরকম একটি বই দেন।মেলার তৃতীয় দিনেও শিশুদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু সিসিমপুর। হালুম, ইকরি, টুকটুকিদের নিয়ে শিশুদের আগ্রহের শেষ নেই। চত্বরটি ঘিরে গানের তালে হাসাহাসি, ছুটাছুটি, খেলাধুলায় মত্ত তারা। তাদের আনন্দে সঙ্গে আসা বাবা-মায়েরাও আনন্দিত। আজ মেলায় তিনটি শো করবে সিসিমপুর।শিশু চত্বরে ক্ষুদে পাঠকদের জন্য পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বই। গল্প, ছড়া, উপন্যাস, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, রম্যগল্প, বর্ণমালা, ধর্মীয়সহ বিভিন্ন ধরনের গল্প পাওয়া যাচ্ছে।

ছোটদের সময় প্রকাশনীতে পাওয়া যাচ্ছে শাকিব হুসাইনের ‘রোবট এলো মেরিন গ্রহে’, মাহফুজুর রহমানের দশ সাহাবীর কাহিনী, হোমায়রা মোর্শেদের ‘এক যে ছিল সত্যি ভূত’। ঝিলমিল প্রকাশনী বর্ণামালাকে নানা রঙে সাজিয়েছে এনেছে বই। শিশু কিশোর প্রকাশনে পাওয়া যাচ্ছে মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের ‘সহজভাবে ছোদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা’ ও সহজভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনী, আলী ইমামের ছোটদের মহাকাশ ও বিজ্ঞান, ইউসুফ আহমেদের ‘ছোটদের গোয়েন্দা কাহিনী’।শিশুকানন প্রকাশনীতে পাওয়া যাচ্ছে প্রিয়নবী মুহাম্মদ সা., আদিগন্ত প্রকাশনীতে গল্পগুলো ভয়ংকর ভূতের, ফুলকুড়ি প্রকাশনীতে ফারুক নাওয়াজের ‘সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ’সহ নানা বই। ঘাসফড়িং প্রকাশনীতে আহসান হাবিবের ‘নীল ডাইনে ফাস্ট বয়’, ছোটদের স্কুলের গল্প, চিরন্তন প্রকাশনীতে সৌমেন সাহার গল্পের অঙ্ক, অঙ্কের গল্প।তবে পাঠকের উপস্থিতি বাড়লেও এখনও বিক্রি তেমন বাড়েনি মনে করতে ন বিক্রয়কর্মী সোহাগ। তিনি বলেন, অনেকে আসছেন। এখনও সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না৷ সামনে হয়তো বাড়বে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন