
হেলথ ডেক্সঃ
হেপাটাইটিস-বি কিংবা সি এর মতো, যকৃতের দীর্ঘমেয়াদী জটিলতার কারণ হচ্ছে হেপাটাইটিস-এ ভাইরাস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক বছরে হেপাটাইসিস রোগের চিকিৎসা নেওয়া শিশুদের ৮০ ভাগই ছিল ‘এ’ ভাইরাসে আক্রান্ত। সংক্রমণ ঠেকাতে শিশুদের বাইরের খাবার না দেওয়ার পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচিতে হেপাটাইটিস-এ অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।গত এক বছরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগে হেপাটাইটিসের চিকিৎসা নেয় প্রায় ৪০০ রোগী। এর মধ্যে, ৩২০ জনের শরীরে পাওয়া যায় হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসের সংক্রমণ। বিএসএমএমইউয়ের আবাসিক চিকিৎসক ডা.সুমিতা বিশ্বাস হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সম্পর্কে জানতে চাওয়ায় জানান, গত এক বছরে হেপাটাইটিস-এ, বি এবং সি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসে আক্রান্ত। এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি, এখন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।দূষিত পানি আর খাবার থেকেই হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হয় বলে জানান চিকিৎসকরা। শুরুতেই চিকিৎসা না নিলে, ভুগতে হয় যকৃতের দীর্ঘমেয়াদী রোগে। রয়েছে মৃত্যুর শঙ্কাও।বিএসএমএমইউয়ের পুষ্টি পরিপাকতন্ত্র ও লিভার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান মজুমদার হেপাটাইটিস-এ নিয়ে জানান, দেখা যায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্ডিস ভালো হয়ে গেলেও কমে না। দুই থেকে তিন মাস যাবৎ শরীর হলুদ থাকে। শরীরে মারাত্মক চুলকানির সমস্যাও দেখা দেয়। ফলে রাতে ঘুম হয় না ঠিকভাবে। অনেক সময় পেটে, বুকে বা ফুসফুসে পানি চলে আসে এবং জমে যায়। হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের পাঁচ শতাংশ রোগী থাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে। যেটাকে বলা হয় একিউট লিভার ফেইলিউর, যার চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এ চিকিৎসাসেবা বাংলাদেশে নেই।নীরব ঘাতক এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। সংক্রমণ ঠেকাতে, শিশুদের বাইরের খাবার খাওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকদের যথেষ্ট সচেতন হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।সরকারের টিকা কর্মসূচির কারণে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই কমেছে দেশে। কর্মসূচিতে, হেপাটাইটিস-এ’র টিকাও অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়েছে চিকিৎসকরা।