৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রেমিট্যান্স বাড়লে ডলার সংকট কমবে: অর্থমন্ত্রী

নিউজ3 ডেক্সঃ
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রবাসী আয় বাড়লেই বৈদেশিক মুদ্রার সংকটসহ চলমান অর্থনৈতিক সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। যে হারে রেমিট্যান্স আসার কথা তা আসছে না। রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার কাঠামোগত সংস্কারের পথ খুঁজছে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং বিশ্বব্যাংকের গভর্ন্যান্স গ্লোবাল প্রাকটিসের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রাকটিস ম্যানেজার হিশাস ওয়েলি।্অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তো বহু মানুষ দেশের বাইরে যাচ্ছেন। তরুণরা স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে গিয়ে স্থায়ী হচ্ছেন। শ্রমিকরাও বৈধপথে বিদেশ যাচ্ছেন। কিন্তু সেই অনুপাতে দেশে রেমিট্যান্স আসছে না। রেমিট্যান্সটা যদি বাড়তো, যেভাবে আগে আসছিল; সেভাবে আসতো, তাহলে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কেন রেমিট্যান্স বাড়ছে না, এটার সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজতে হবে। সমাধানের পথ বের করতে হবে। এজন্য আমাদের যারা অর্থনীতিবিদ রয়েছেন, এ সেক্টরের বিশেষজ্ঞ রয়েছেন, তাদের কাছে আমরা উদ্ভাবনী পরামর্শ চাইবো। আপনারা রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক রাখতে সংস্কারের প্রস্তাব-পরামর্শ দিলে আমরা গ্রহণ করবো।’এর আগে বেলা ১১টার দিকে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন বিষয়ে প্যানেল আলোচনা হয়। এতে আলোচক ছিলেন সাবেক পাঁচ অর্থসচিব। তারা হলেন-মো. জাকির আহমেদ খান, ড. মোহাম্মদ তারেক, মো. ফজলে কবির, মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, আব্দুর রউফ তালুকদার।গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ধারাবাহিকভাবে কমছে প্রবাসীদের ডলার পাঠানো বা রেমিট্যান্স প্রবাহের হার। আগস্ট মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরেও কম এসেছে প্রবাস আয়।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, প্রবাসীরা সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার।এতে প্রতিদিন গড়ে ৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫২ হাজার মার্কিন ডলার এসেছে দেশে। আগস্ট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। যা তার আগের ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ফলে কমে যাচ্ছে রিজার্ভ।
এ অবস্থায় অনুষ্ঠানে বিদেশে শ্রমশক্তির বিপরীতে কেন প্রবাসী আয় বাড়ছে না তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্বব্যাংকের গভর্ন্যান্স গ্লোবাল প্র্যাকটিসের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্র্যাকটিস ম্যানেজার হিশাম ওয়েলি বলেন, ‘সত্যিই বাংলাদেশ ভালো করছে। সম্প্রতি সর্বজনীন পেনশন স্কিমটা আমি দেখেছি, সেটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি আমরা। এ স্কিমের দিকে সরকারকে কঠোর নজর রাখতে হবে। এখানে নাগরিকদের সঞ্চয় করা অর্থ জমানো হবে।’তিনি বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে আরও কাজ করার আহ্বান জানাবো আমরা। ছিন্নমূল মানুষ, প্রত্যন্ত এলাকার জনগণ যেন শহরের মানুষের মতো সুযোগ-সুবিধা পান, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। আর এটা বাস্তবায়নে অর্থ বিভাগকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। আশা করি বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের দায়িত্বে থাকা চৌকষ কর্মকর্তারা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারবেন।’বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বিশেষ অতিথির ভাষণে বলেন, ‘বাংলাদেশ গত এক দশকে অর্থনীতিতে অনেক উন্নতি করেছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসই দেখতে চায়। বাংলাদেশ সরকারকে সিনিয়র সিটিজেনের (বয়স্ক নাগরিক) সুরক্ষা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দারিদ্র্যের হার আরও কমাতে হবে। অর্থপাচার ও সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবস্থাপনায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এগিয়ে যেতে হবে।’

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন