
তাপস কুমার নন্দীঃ
৫০০ বছর পর অযোধ্যার রামনগরীতে পালিত হচ্ছে রামনবমী। রামের জন্মোৎসব ঘিরে সেজে উঠেছে অযোধ্যাধাম। সুসজ্জিত নবনির্মিত রাম মন্দির। উপচে পড়েছে ভক্তদের ভিড়। সকাল থেকেই বিভিন্ন আচার পালিত হচ্ছে সেখানে। তবে সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ছিল রামলালার সূর্যতিলকের জন্য।কী এই সূর্যতিলক?

রামনবমীতে আজ প্রথম সূর্যাভিষেক হল রামলালার। প্রস্তুতিও কম ছিল না। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রামলালার কপালে সূর্যতিলক এঁকে দিলেন বিজ্ঞানীরা। সূর্যকিরণ গর্ভগৃহে ঢুকে রামলালার কপাল থেকে ঠিকরে জ্যোতির বিচ্ছুরণ ঘটাল।

কী ভাবে ঘটেছে এই বিস্ময়কর ঘটনা?

গর্ভগৃহে সূর্যের প্রথম কিরণ ঢুকে রামলালার মুখমণ্ডলে পড়ল। রামনবমীর দুপুরে ঠিক ১২টা বেজে ১৬ মিনিটে সূর্যের আলোর একটি রশ্মি সরাসরি রামলালার মূর্তির কপালে এসে পড়ল। সেখান থেকে প্রতিফলিত হয়ে গোটা মন্দির আলোয় আলোয় ভরিয়ে দিল। মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে সূর্যের আলো গর্ভগৃহে ঢোকানো হল আইআর ফিল্টার দিয়ে। এই সৌরকিরণ যাতে প্রতিফলিত হয়ে রামলালার ঠিক কপালের মাঝখানে পড়ে সেজন্য চারটি লেন্স ও চারটি আয়নাকে বিশেষ কৌণিক অবস্থানে বসানো হয়েছিল। লেন্স ও আয়নার সঙ্গে ১৯টি গিয়ারবক্স বসানো হয়েছে মন্দিরে। এই গিয়ারবক্স হয়েই সূর্যের রশ্মি গর্ভগৃহে ঢুকে লেন্সে প্রতিফলিত হয়েছে। বিভিন্ন সুএ বলেছেন গিয়ারগুলির সাহায্যে, প্রতি বছর রাম নবমীর দিন সূর্যের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাবে লেন্স এবং আয়নাগুলির অবস্থানও।রুরকির সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বিশেষ এক ধরনের লেন্স ও আয়না তৈরি করেছেন যা মন্দিরের কাঠামোর সঙ্গে জোড়া হয়েছে। সূর্যরশ্মির মন্দিরর গায়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আয়না ও লেন্সে বারবার প্রতিফলিত হয়ে গর্ভগৃহে ঢুকে রামলালার মূর্তির কপালে পড়েছে। বেঙ্গালুরু ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিউট অফ অ্য়াস্ট্রো ফিজিক্স ও উত্তরাখণ্ডের বেঙ্গালুরুর অপটিক কোম্পানির চেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছে। এই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রধান অবদান রয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিউট অফ অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সেরও।কখন-কোথায় দেখা গিয়েছে রামলালার সূর্যতিলক?আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিট নাগাদ সূর্যাভিষেকের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে । চলছে বেলা ১২টা ৩ মিনিট পর্যন্ত। এরপর ১২টা ১৬ মিনিটে হয়েছে সূর্যতিলক। মন্দির পরিচালনা কমিটি ১০০টি জায়গায় LED স্ক্রিনে সরাসরি সম্প্রচার করেছে এই সূর্যতিলক অনুষ্ঠান। এই বিশেষ মুহূর্ত দেখা গিয়েছে ডিজিটালে। এবং দুরদর্শনে সারাবিশ্বের মানুষ লাইভ দেখেছেন এই অনুষ্ঠান।
