৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দুর্নীতি মুক্ত হোক

যীশু কুমার আচার্য্য

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দুর্নীতি মুক্ত হোক
অনতি বিলম্বে দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর ভাব-মূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হবে। আর কতকাল চলবে কতিপয় কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ কর্তৃক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুর্নীতি?কয়েক মাসে আগে চট্টগ্রামের দৈনিক পত্রিকায় খবর বেরিয়েছিল যে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাংলাদেশের সকল মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের চাইতে সেবাই শীর্ষে, কিন্তু বরাদ্ধ কম। আজ চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে ১টি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে যে সংবাদ প্রকাশিত হয় তা পুরোপুরি বিপরীত। কতিপয় কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যক্তির দুর্নীতির কারণে আজকে পত্রিকায় নেগেটিভ সংবাদ প্রকাশিত হল। আমি নিজেও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন রোগী ও নিয়মিত সেবা গ্রহীতা। আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বর্হি বিভাগের চিকিৎসা ও সেবা নিয়ে থাকি। আমিও একজন ভুক্তভোগী। আমার আর্থিক দৈন্যতার বিষয়টি হৃদরোগ বিভাগের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানতে পেরে আমাকে বর্হি বিভাগ হতে ফ্রি মেডিসিন স্লিপ দেয়। হৃদরোগ বিভাগের সম্মানিত ডাক্তারা ঔষধের অর্ডার স্লিপে ৭-৮পাতা (প্রতি পাতায় ১০টি করে) দেওয়ার আদেশ দিলেও অর্ডার স্লিপ নিয়ে যখন হাসপাতালের ফার্মেসী বিভাগে যাই, সেখানকার একজন কর্মচারী আমাকে বলে যে চার পাতা নেন, বাকীগুলো সাপ্লাই নেই (আমার কাাছে প্রমাণও আছে)। এই অজুহাতে দীর্ঘ চার মাস ধরে আমাকে বঞ্চিত করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফার্মেসীর ঐ কর্মচারী (যিনি ঔষধ সরবাহের দায়িত্বে থাকা জেষ্ট কর্মকর্তা বটে)। আমি কিছুদিন ধরে ভাবছি বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় প্রধান বা পরিচালকের বরাবরে অভিযোগ করব; কারণ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আজ পত্রিকায় যে প্রতিবেদন বের হল, তার সূত্র ধরে সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আমাদের মৌলিক অধিকার সমূহের মধ্যে চিকিৎসা সেবা পাওয়া অন্যতম একটি। আমি একজন হার্টের রোগী। যখন আমার টাকা ছিল তখন দোকান হতে ঔষধ ক্রয় করে সেবন করতাম। কিন্তু যখন আমি চরম আর্থিক দৈন্যতায় ভুগছি, তখন আমি হাসপাতালের শরনাপন্ন হই। সংম্লিষ্ট চিকিৎসক আমার আর্থিক অবস্থার বিষয়টি জানতে পেরে সহৃদয়তার সহিত আমাকে ফ্রি মেডিসিন (শুধুমাত্র হার্টে র ঔষধের) স্লিপ দিয়েছিল ঐ স্লিপ এর অধীনে আমি হাসপাতালের বর্হিবিভাগের চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে হাসপাতালের ফার্মেসীতে গিয়ে ঔষধ সংগ্রহ করতাম। চিকিৎসকের আদেশকে ফার্মেসীর কতিপয় কর্মচারী অগ্রাহ্য করে আমাকে দীর্ধদিন ধরে কম ঔষধ সরবরাহ করছে। অথচ ঔষধ সংগ্রহ করতে আমার অনেক সময় ব্যয় হয়। লাইন ধরে টিকেট কাটতে হয়। তারপর বহিবিভাগে যেতে হয় এবং সেখান হতে চিকিৎসকের সীল ও স্বাক্ষরযুক্ত মেডিসিন স্লিপ নিতে হয়। তারপর মেডিকেলের ফার্মেসীতে গিয়ে ঔষধ সংগ্রহ করতে হয়। ফার্মেসীর ঐ কর্মকর্ত। আমার সাথে দীর্ঘ চার মাস মাস ধরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে যেভাবে বঞ্চিত করছে, তা সম্পূর্ণরূপে মানবাধিকার লংঘন বটে। অনতি বিলম্বে দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে এই হাসপাতালের সুনাম পুনরুদ্ধার করা যায়।


মানবাধিকার কর্মী, লেখক, সাংবাদিক

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন