৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রাম নগরে হকাররা ফুটপাত ছাড়েনি

মাসুদ পারভেজঃ

নগরের প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে ফুটপাতের ওপর বসানো আট শতাধিক অবৈধ দোকান ও স্থাপনা বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) উচ্ছেদ করেছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। অভিযান চালানোর পর দুইদিন পর আবারও ফুটপাতের দুয়েক জায়গায় হকার বসতে শুরু করে।এরপর সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে পুনর্দখল ঠেকাতে অভিযান শুরু করে চসিক। এতে ক্ষুব্ধ হকাররা চসিক অভিযান দলের ওপর হামলা চালায়।ভাঙচুর করে করপোরেশনের গাড়ি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে হকাররা আমতল ও নুপুর মার্কেটের সামনে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।এ সংঘর্ষের ঘটনায় চসিক ও পুলিশ মঙলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা করেছে। দুই মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।আসামিদের মধ্যে শ্রমিক লীগ, হকার্স লীগ, মেট্রোপলিটন হকার্স সমিতি, ফুটপাত হকার্স সমিতির নেতারা রয়েছেন।এরপরই ওই এলাকা ফিরেছে পুরনো রূপে। আমতল, নিউমার্কেট ও স্টেশন রোডের ফুটপাত দখল করে বসে গেছে হকাররা। দেখা গেছে, আমতল শাহ আমানত মার্কেট থেকে হকার মার্কেটের গলি পর্যন্ত হকাররা ফুটপাতে খাট পেতে ব্যবসা করছেন।বিপরীত দিকে জলসা মার্কেটের সামনে সড়কে ত্রিপল টাঙিয়ে ও খাট পেতে জুতা বিক্রি করছেন হকাররা। একই চিত্র নিউমার্কেট মোড় থেকে ফলমন্ডি এবং জিপিও সড়কের কোতোয়ালির মোড় পর্যন্ত। এতে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।চট্টগ্রাম ফুটপাত হকার সমিতির সভাপতি নুরুল আলম বলেন, পরিবার চালাতে হকাররা শৃঙ্খলার মধ্যেই ব্যবসা করছিলেন। অথচ কোনো ঘোষণা ছাড়াই রমজানের আগে এভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বিনা নোটিশে পাঁচ হাজার হকারের রুটি-রুজি নষ্ট করা হয়েছে।চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হকার্স সমিতির সভাপতি মিরন হোসেন মিলন বলেন, আগের মেয়র ও প্রশাসকরা বিকেল ৩টা থেকে হকারদের ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। আমাদের আইডি কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। এ জন্য প্রায় ৯ হাজার হকারের তালিকা করা হয়েছিল।কোতোয়ালি থানার ওসি এস এম ওবায়েদুল হক বলেন, পুলিশের দায়ের করা মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের মামলায় অভিযুক্ত ১১ জন পুলিশের মামলারও আসামি। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, হকাররা ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা করার কারণে নানান অপরাধ ও দুর্ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা বলেন, ফুটপাত ও সড়ক দখল করে স্থাপনা ও দোকান তৈরি করা হয়েছিল। এসবের কারণে পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা হয়। এ ছাড়া যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। হকাররা যাতে পুনরায় সড়ক ও ফুটপাত দখল করতে না পারে, সে বিষয়ে নজরদারি রাখা হবে।মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, রেলওয়ের খালি জায়গায় হলিডে মার্কেট হবে। আগ্রাবাদ ও বায়েজিদ এলাকাও হকারমুক্ত হয়েছে। সেখানেও হলিডে মার্কেট করা হবে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার ও শনিবার সারাদিন ও রাতে তারা ব্যবসা করতে পারবে।তিনি বলেন, হলিডে মার্কেটের উপযোগী লাইট ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে সরবরাহ করা হবে। হলিডে মার্কেট চালু হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, যানজটমুক্ত ও সুন্দর পরিবেশ থাকবে এবং ফুটপাতগুলো দিয়ে পথচারীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবে।

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin
Share on print

আরও পড়ুন