পলাশ কান্তি নাথঃ
শারদীয় দূর্গোৎসবের ৪র্থ দিন আজ মহা নবমী। চন্দ্রের নবমী তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আজ পালন করবেন মহা নবমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা। দুর্গোৎসবের মহানবমীতে ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজিত হন দেবী দুর্গা।
এদিন বিশেষ কোনো পর্ব না থাকলেও নবমীর সন্ধ্যায় দেবীদুর্গার ‘মহা আরতি’ করা হয়। মহানবমীতে বলিদান ও নবমী হোমের রীতি রয়েছে। মূলত ‘সন্ধিপূজা’ শেষ হলে শুরু হয় মহানবমী।আজ সোমবার সকাল থেকেই বিহিতপূজার মাধ্যমে শুরু হয়েছে মহানবমী পূজা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়বে ভক্তদের ভিড়। পূজা শেষে যথারীতি থাকবে অঞ্জলি নিবেদন ও প্রসাদ বিতরণ। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রাণের উৎসবে ভক্তদের মাঝে বইবে বিষাদের সুর।
শ্রী শ্রী চণ্ডী থেকে জানা যায়, দুর্গা রুদ্ররূপ (মা কালী) ধারণ করে মহিষাসুর এবং তার তিন যোদ্ধা চণ্ড, মুণ্ড এবং রক্তবিজকে হত্যা করেন। নবমী তিথি শুরুই হয় সন্ধিপূজা দিয়ে। সন্ধিপূজা হয় অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর সূচনার প্রথম ২৪ মিনিট জুড়ে। মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা হয় এই সময়ে। ১০৮টি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ও ১০৮টি পদ্মফুল নিবেদন করা হয় দেবীর চরণে। আর ঠিক এই কারণে পূজার মন্ত্রেও সেই বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।মহা নবরাত্রিতে দেবীদুর্গার আরাধনার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। যদিও সারাবছর ধরে যে উৎসবের জন্য অপেক্ষা করা হয়, তার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় এই নবমী নিশি। তাই নবমী নিশিকে সবাই ধরে রাখতে আকুতি জানায়। বাজতে থাকে একটাই সুর ‘ওরে নবমী-নিশি, না হইও রে অবসান’।পুরোহিতদের মতে, মহানবমীতে ভক্তদের দেওয়া ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজা হবে দেবীদুর্গার। এছাড়া আজ নীলকণ্ঠ, নীল অপরাজিতা ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে মহানবমীর বিহিতপূজা হবে।জানা যায়, মহানবমীর দিনে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবীদুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হবে। ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে। নবমী তিথিতে দেবী দুর্গার আরাধনা হয় দেবী সিদ্ধিদাত্রী রূপে। দেবী সিদ্ধিদাত্রীর রূপ ঐশ্বরিক। তিনি পার্থিব আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন এবং অজ্ঞতা দূর করেন। মূলত আজই পূজার শেষ দিন।আগামীকাল বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্যদিয়ে দেবীদুর্গাকে বিদায় জানাবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।