ঝলক কান্তি বিশ্বাসঃ
শ্রী শ্রী পাতাল কালী বাড়ি মন্দির পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত শ্রী শ্রী হরগৌরী মন্দির ও শ্রী শ্রী গণেশ মন্দিরের শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ১৮ ই জুন রোজ মঙ্গলবার। যথার্থ মর্যাদায় ধর্মীয় আচার বিধি মেনে মন্দির শুভ উদ্বোধনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ মন্দিরের ঠিক পূর্ব পাশে পাহাড়ের একদম সোজা নিচে অবস্থিত প্রায় ৫০০ বছরের বেশি পূরানো বিষ্ময়কর ও জাগ্রত এই হর-গৌরী মন্দির।চারপাশ পাহাড় দিয়ে ঘেরা এই মন্দিরে রয়েছে একটি বড় ও আরেকটি সামান্য ছোট শিবলিঙ্গ। শিবলিঙ্গগুলো হর ও পার্বতী হিসাবেই পূজ্যনীয় ভক্তদের কাছে।বিগ্রহের গায়ে লাগানো একটি শ্বেত পাথরের নাম ফলক থেকে জানা যায় ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ২৯ শে পৌষ মাসে ২৪ পরগনার চাম্পাহাট নিবাসী বৈকুন্ঠ নাথ বিধ্যানিধি কর্তৃক ও এই শিব বিগ্রহের উপর একটি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছিলো। সময়ের সাথে প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও পাহাড় ধসে মন্দির টি সম্পূর্নরূপে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিলো প্রায় ৮০-৯০ বছর। এতো বছর জোঁক ও জীবজন্তুর ভয়ে মানুষদের ও আসা যাওয়া বন্ধ ছিলো এই মন্দিরে । বিগত ২০১৯ - ২০ সালের দিকে শ্রী শ্রী পাতাল কালী বাড়ি মন্দির পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক মন্দির টি প্রাথমিক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং সাধারণ তীর্থযাত্রীদের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ২০২২-২৩ সালে মন্দির কমিটির পক্ষ হতে একটি অস্থায়ী ঘর নির্মান করে একজন সাধু ( উত্তম সাধু) কে পূজা-অর্চনা ও থাকা খাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। জানা যায় গত ৭-৮ মাস আগে দক্ষিণ কাট্টলি হরগৌরী সংঘের একদল তরুণ তীর্থভ্রমণে এসে হরগৌরী মন্দিরে এসে রাত্রি যাপন করে। তখন তারা মন্দির দেখভালের দায়িত্বে থাকা সাধুর সাথে মন্দির স্হায়ী সংস্কারের আগ্রহ প্রকাশ করে। পরদিন যাবার সময় সাধুর হাতে ২ টাকা সংস্কার কাজের বায়না করে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান তারা যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করবে। সেদিনের ২ টাকার বায়না শুনে অনেকে হয়তো হেসে উড়িয়েবদিবে, অনেকে হয়তো পাগলামি ভাববে কিন্তু দক্ষিণ কাট্টলি হরগৌরী সংঘের সদস্যরা বিষয় টা সিরিয়াসলিই নিয়ে ছিলো। তারা দেখাতে চেয়েছিলে ইচ্ছে থাকলে সব কিছু করে দেখানো সম্ভব । তাই তো মন্দির পরিচালনা পরিষদের সাথ আলোচনা করে মন্দির পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের পূর্ন সহযোগিতার পেয়ে মাত্র ৭-৮ মাসের মধ্যে ৯- ১০ লক্ষ টাকার অনুদান সংগ্রহ করে,নিজেরা দিন রাত গায়ে খেটে অক্লান্ত পরিশ্রম করে হরগৌরী মন্দির স্হায়ী সংস্কার ও নতুন গনেশ মন্দির সম্পূর্ণ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ কাট্টলি হরগৌরী সংঘ প্রমাণ করে দেখিয়েছে ইচ্ছে ও সৎ সাহস থাকলে দূর্গম পাহাড়ের মধ্যে ও মন্দির উন্নয়ন সম্ভব। পাতাল কালী বাড়ি মন্দির পরিচালনা পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও স্হানীয় সনাতনী সম্প্রদায় দক্ষিণ কাট্টলি হরগৌরী সংঘের এমন মহৎ উদ্যোগ এর ভূয়সী প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।